ইমতিয়াজ মাহমুদ এর ১০ টি ছোট প্রতিকবিতা

 




ব্যর্থতা শিল্পীর পুরস্কার আর নৈরাশ্য মুকুট,

মৃতপ্রায় গাছটিও চায়—শেষ ফুলটি ফুটুক।


বড় হয়ে যাদের দেখাতে চাইবেন যে, বড় হয়েছেন, বড় হয়ে তাদের বেশিরভাগকেই আর জীবিত দেখতে পাবেন না।


পাহাড়, মনে রেখো তারে

নদী—আর না এলে ফিরে,

সে হয়তো পথ তৈরি করছে

নিজের বুকটা ছিঁড়ে!


একই আকাশ—ভিন্ন তবু মানে,

পাখির গানের মধ্যবর্তী স্থানে।


বাবার আমার দিবস ছিলো না, ছিলো কয়েকটি রাত্রি,

যে রাতের কোনো তারা ছিলো না, মা ছিলেন তার ধাত্রী।


এমন...বৃষ্টির...দিন,  গন্তব্যও ডুবে গেলো শেষে,

সমুদ্র হারিয়ে যায় নাবিককে পৌঁছে দিতে এসে!


কথাও কিন্তু ভাঙে—কথা ভাঙছে নীরবতা,

আমি তোমার কথার মাঝের অন্যমনষ্কতা।


পাখির নেই শেকড় আর বৃক্ষের নেই ডানা,

একজীবনে যায় না তাই পরস্পরকে জানা।

২০১৬


মানুষ নিজের একটা ভাবমূর্তি তৈরি করে তার ভেতরে  বন্দী হয়ে থাকে।


১০

জোছনা

যদিও দেখতে ভালো

তবু তাকে আমি বিশ্বাস করি না,

চাঁদকে ছেড়ে এসেছে

যে আলো।



ইমতিয়াজ মাহমুদ কে নিয়ে লেখা কবি সজল আহমেদ এর কবিতা


আমি ইমতিয়াজ মাহমুদ কে হিংসা করি

.
আমি একটা সুন্দর কবিতা লিখতে চাচ্ছি, 
কিন্তু কিছুতেই সেটা কবিতা হয়ে উঠছে না। 
অথচ আমি ইমতিয়াজ মাহমুদকে চিনি—
 শূন্য হতে কবিতা বানান তিনি। 

সাধ্যমতো মেটাফোর, সাধ্যমতো রিদমেড, আর যেমন, সংজ্ঞায়িত করলে একটা হৃদয় 
ভাগ হয়ে বিশ্লেষিত হয় প্রশ্নবিদ্ধ পাখিরাও—
 যথাযথ নিয়মে আমি তাও করলাম। 
কিন্তু কোন কবিতা বের হচ্ছে না! 


দুপুরে ভাত খেয়ে, রাতের শেষ সিগারেটটাও শেষ করে আমি তার আর কুল-কিনারা করতে পারিনাই।

এখন ইমতিয়াজ মাহমুদ কে আমার হিংসে হয়,
 আমি ইমতিয়াজ মাহমুদ কে জানি— 
ক লিখেও কবিতা বানান তিনি।


আমি চেষ্টা করছি 
চেষ্টা করছি 
মাটি থেকে ফুল
কিশোরীর চুল
হাতের বালা 
বোনের দুল 
কোন কিছু হতেই সম্পুর্ণ একটা কবিতা লেখা আমার পক্ষে পসিবল নয়!
এযেন কোন বন্দিশালায় বন্দি আমার মগজ; 
চুকচুক করে টেনে খেয়ে যায় বিড়াল। 
.
ঈশ্বর আমি কি তবে ব্লকেই আছি— ব্লকে বসে ক্লক দেখতে দেখতে, 
হারুত-মারুত এসে পরলে বোধহয়; 
কিংবা যিশু আকসা হতে বিজয় 
নিশান নিয়ে গাঁড়বে যেদিন কঠিন আরব সীমায়—
 কবিতা সেদিন বেরুলেও বেরুতে পারে?  
হয়তো সেদিন মাহদিও বের হবে— 
আর বিজয়ী তলোয়ারে ইমতিয়াজ মাহমুদ তাঁর 
এক টুকরো কাপলেট লিখে দিয়ে; 
আগেভাগেই লুকিয়ে কোথাও যাবে। 


কে জানে কিভাবে;
একটা কবিতা
বুক ছিড়ে বের হবে। 


আচ্ছা মাবুদ, তাহলে থাক
কবিতা যদি নাইবা করো বের—
তোমায় দিচ্ছি শুনিয়ে একটা শের;
কবিতা যদি মগজে না দাও; 
এই মোনাজাত কবুল করে নিও;
পরকালে আমায় তুমি ইমতিয়াজ ভাই'র কবিতা করে দিও!




নোটঃ কাল রাতে শ্রদ্ধেয় কবি ইমতিয়াজ মাহমুদ এর “লাইভ” কবিতা পুনরায় পড়তে পড়তে আমার খুব হিংসেই হচ্ছিলো — কিভাবে সম্ভব এমন করে কবিতা লিখে ফেলা? এ কিভাবে সম্ভব? কিভাবে? হিংসে করতে করতে এটা লিখে ফেলছি৷ সত্য বলতে ইমতিয়াজ ভাইকে আমার হিংসে হয়, আর এ হিংসে মাঝেমাঝে এমন পর্যায়ে যায় যে — আমি শ্রদ্ধায় মাথা নত করে ফেলে তাঁর কবিতাকে কুর্নিশ করে ফেলি! তাঁর কবিতাগুলো আমার কাছে বিস্ময়কর আর আমি এও জানি যারা তাঁর কবিতাগুলো পড়েন তাদের সবার কাছে, হোক নতুন বা পুরোনো পাঠক সবার কাছেই তাঁর সবগুলো কবিতা বিস্ময়কর!




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন