তাসলিমা নাসরিন এর সেরা কবিতা সংগ্রহ



ব্যস্ততা – তসলিমা নাসরিন

তোমাকে বিশ্বাস করেছিলাম, যা কিছু নিজের ছিল দিয়েছিলাম,
যা কিছুই অর্জন-উপার্জন !
এখন দেখ না ভিখিরির মতো কেমন বসে থাকি !
কেউ ফিরে তাকায় না।
তোমার কেন সময় হবে তাকাবার ! কত রকম কাজ তোমার !
আজকাল তো ব্যস্ততাও বেড়েছে খুব।
সেদিন দেখলাম সেই ভালবাসাগুলো
কাকে যেন দিতে খুব ব্যস্ত তুমি,
যেগুলো তোমাকে আমি দিয়েছিলাম ৷


হাত – তসলিমা নাসরিন

আবার আমি তোমার হাতে রাখবো বলে হাত
গুছিয়ে নিয়ে জীবনখানি উজান ডিঙি বেয়ে
এসেছি সেই উঠোনটিতে গভীর করে রাত
দেখছ না কি চাঁদের নীচে দাঁড়িয়ে কাঁদি দুঃখবতী মেয়ে !
আঙুলগুলো কাঁপছে দেখ, হাত বাড়াবে কখন ?
কুয়াশা ভিজে শরীরখানা পাথর হয়ে গেলে ?
হাত ছাড়িয়ে নিয়েছিলাম বর্ষা ছিল তখন,
তখন তুমি ছিঁড়ে খেতে আস্ত কোনও নারী নাগাল পেলে।
শীতের ভারে ন্যুব্জ বাহু স্পর্শ করে দেখি
ভালবাসার মন মরেছে, শরীর জবুথবু,
যেদিকে যাই, সেদিকে এত ভীষণ লাগে মেকি।
এখনও তুমি তেমন আছ। বয়স গেল, বছর গেল, তবু।
নিজের কাঁধে নিজের হাত নিজেই রেখে বলি :
এসেছিলাম পাশের বাড়ি, এবার তবে চলি।


দুঃখপোষা মেয়ে – তসলিমা নাসরিন

কান্না রেখে একটুখানি বস
দুঃখ-ঝোলা একেক করে খোল…
দেখাও তোমার গোপন ক্ষতগুলো
এ ক’দিনে গভীর কতো হল।
ও মেয়ে, শুনছ !
বাইরে খানিক মেলে দাও তো এসব
দুঃখ তোমার একদম গেছে ভিজে…
হাওয়ার একটি গুণ চমৎকার
কিছু দুঃখ উড়িয়ে নেয় নিজে।
ও কী গুণছ !
দিন!
দিন তো যাবেই ! দুঃখপোষা মেয়ে !
শুকোতে দাও স্যাঁতস্যাঁতে এ জীবন
রোদের পিঠে, আলোর বিষম বন্যা
হচ্ছে দেখ, নাচছে ঘন বন…
সঙ্গে সুখী হরিণ।
ও মেয়ে হাসো,
নিজের দিকে দু’চোখ দাও, নিজেকে ভালোবাসো।


চরিত্র – তসলিমা নাসরিন

তুমি মেয়ে,
তুমি খুব ভাল করে মনে রেখো
তুমি যখন ঘরের চৌকাঠ ডিঙোবে
লোকে তোমাকে আড়চোখে দেখবে।
তুমি যখন গলি ধরে হাঁটতে থাকবে
লোকে তোমার পিছু নেবে, শিস দেবে।
তুমি যখন গলি পেরিয়ে বড় রাস্তায় উঠবে
লোকে তোমাকে চরিত্রহীন বলে গাল দেবে।
যদি তুমি অপদার্থ হও
তুমি পিছু ফিরবে
আর তা না হলে
যেভাবে যাচ্ছ, যাবে।


ভুল প্রেমে কেটে গেছে তিরিশ বসন্ত – তসলিমা নাসরিন

ভুল প্রেমে কেটে গেছে তিরিশ বসন্ত, তবু
এখনো কেমন যেন হৃদয় টাটায়-
প্রতারক পুরুষেরা এখনো আঙুল ছুঁলে
পাথর শরীর বয়ে ঝরনার জল ঝরে।
এখনো কেমন যেন কল কল শব্দ শুনি
নির্জন বৈশাখে, মাঘ-চৈত্রে-
ভুল প্রেমে কেটে গেছে তিরিশ বসন্ত, তবু
বিশ্বাসের রোদে পুড়ে নিজেকে অঙ্গার করি।
প্রতারক পুরুষেরা একবার ডাকলেই
ভুলে যাই পেছনের সজল ভৈরবী
ভুলে যাই মেঘলা আকাশ, না-ফুরানো দীর্ঘ রাত।
একবার ডাকলেই
সব ভুলে পা বাড়াই নতুন ভুলের দিকে
একবার ভালোবাসলেই
সব ভুলে কেঁদে উঠি অমল বালিকা।
ভুল প্রেমে তিরিশ বছর গেল
সহস্র বছর যাবে আরো,
তবু বোধ হবে না নির্বোধ বালিকার।



দেহতত্ত্ব – তসলিমা নাসরিন

এতকাল চেনা এই আমার শরীর
সময় সময় একে আমি নিজেই চিনি না।
একটি কর্কশ হাত
নানান কৌশল করে চন্দন চর্চ্চিত হাতখানি ছুঁলে
আমার স্নায়ুর ঘরে ঘণ্টি বাজে, ঘণ্টি বাজে
এ আমার নিজের শরীর
শরীরের ভাষা আমি পড়তে পারি না।
সে নিজেই তার কথা বলে নিজের ভাষায়।
তখন আঙুল, চোখ, ঠোঁট, এই মসৃণ পা
কেউই আমার নয়।
এ আমারই নয়
এ আমারই হাত।
অথচ এ হাত আমি সঠিক চিনি না
এই আমারই ঠোঁট, এ আমার জংঘা-উরু
এসবের কোন পেশী, কোন রোমকূপ
আমার অধীন নয়, নিয়ন্ত্রিত নয়।
স্নায়ুর দোতলা ঘরে ঘণ্টি বাজে
এই পৃথিবীতে আমি তবে কার ক্রীড়নক
পুরুষ না প্রকৃতির ?
আসলে পুরুষ নয়
প্রকৃতিই আমাকে বাজায়
আমি তার শখের সেতার।
পুরুষের স্পর্শে আমি
ঘুমন্ত শৈশব ভেঙে জেগে উঠি
আমার সমুদ্রে শুরু হয় হঠাৎ জোয়ার।
রক্তে মাংসে ভালবাসার সুগন্ধ পেলে
প্রকৃতিই আমাকে বাজায়
আমি তার শখের সেতার।





টোপ -তসলিমা নাসরিন

যেরকম ছিলে, সেরকমই তুমি আছ
কেবল আমাকে মাঝপথে ডুবিয়েছ
স্বপ্নের জলে উলটো ভাসান এত
আমি ছাড়া আর ভাগ্যে জুটেছে কার!

আগাগোড়া তুমি অবিকল সেই তুমি
বড়শিতে শুধু গেঁথেছ দু’চার খেলা
অলস বিকেল খেলে খেলে পার হলে
রাত্তিরে ভাল নিদ্রাযাপন হয়।

তুমি তো কেবলই নিদ্রার সুখ চেনো
একশো একর জমি নিজস্ব রেখে
এক কাঠা খোঁজো বর্গার তাড়নায়
বর্গার চাষ পৃথক স্বাদের কিনা!

স্বাদ ভিন্নতা পুরুষ মাত্র চায়
তুমি তো পুরুষই, অধিক কিছু নও।
পুরুষেরা ভাল চোখ খেতে জানে চোখ
আমার আবার কাজলের শখ নেই।

বড়শিতে গাঁথা হৃদপিন্ডের আঁশ
ছিঁড়ে খেতে চাও, তুমি তো পুরুষই
খাবে।
সাঁতার জানি না, মধ্যনদীতে ডুবি
অন্ধকে টোপ দেবার মানুষ নেই।




এমন ভেঙ্গে চুরে ভালো কেউ বাসেনি আগে – তসলিমা নাসরিন


কী হচ্ছে আমার এসব!
যেন তুমি ছাড়া জগতে কোনও মানুষ নেই, কোনও কবি নেই, কোনও পুরুষ নেই, কোনও
প্রেমিক নেই, কোনও হৃদয় নেই!
আমার বুঝি খুব মন বসছে সংসারকাজে?
বুঝি মন বসছে লেখায় পড়ায়?
আমার বুঝি ইচ্ছে হচ্ছে হাজারটা পড়ে থাকা কাজগুলোর দিকে তাকাতে?
সভা সমিতিতে যেতে?
অনেক হয়েছে ওসব, এবার অন্য কিছু হোক,
অন্য কিছুতে মন পড়ে থাক, অন্য কিছু অমল আনন্দ দিক।
মন নিয়েই যত ঝামেলা আসলে, মন কোনও একটা জায়গায় পড়ে রইলো তো পড়েই রইল।
মনটাকে নিয়ে অন্য কোথাও বসন্তের রঙের মত যে ছিটিয়ে দেব, তা হয় না।
সবারই হয়ত সবকিছু হয় না, আমার যা হয় না তা হয় না।

তুমি কাল জাগালে, গভীর রাত্তিরে ঘুম থেকে তুলে প্রেমের কথা শোনালে,
মনে হয়েছিল যেন স্বপ্ন দেখছি
স্বপ্নই তো, এ তো একরকম স্বপ্নই,
আমাকে কেউ এমন করে ভালোবাসার কথা বলেনি আগে,
ঘুমের মেয়েকে এভাবে জাগিয়ে কেউ চুমু খেতে চায়নি
আমাকে এত আশ্চর্য সুন্দর শব্দগুচ্ছ কেউ শোনায়নি কোনওদিন
এত প্রেম কেউ দেয়নি,
এমন ভেঙে চুরে ভালো কেউ বাসেনি।
তুমি এত প্রেমিক কী করে হলে!
কী করে এত বড় প্রেমিক হলে তুমি? এত প্রেম কেন জানো? শেখালো কে?
যে রকম প্রেম পাওয়ার জন্য সারাজীবন অপেক্ষা করেছি, স্বপ্ন দেখেছি, পাইনি
আর এই শেষ বয়সে এসে যখন এই শরীর খেয়ে নিচ্ছে একশ একটা অসুখ-পোকা
যখন মরে যাবো, যখন মরে যাচ্ছি — তখন যদি থোকা থোকা প্রেম এসে ঘর ভরিয়ে দেয়,
মন ভরিয়ে দেয়, তখন সবকিছুকে স্বপ্নই তো মনে হবে,
স্বপ্নই মনে হয়।
তোমাকে অনেক সময় রক্তমাংসের মানুষ বলে মনে হয় না,
হঠাৎ ঝড়ে উড়ে হৃদয়ের উঠোনে
যেন অনেক প্রত্যাশিত অনেক কালের দেখা স্বপ্ন এসে দাঁড়ালে।
আগে কখনও আমার মনে হয়নি ঘুম থেকে অমন আচমকা জেগে উঠতে আমি আসলে
খুব ভালোবাসি
আগে কখনও আমার মনে হয়নি কিছু উষ্ণ শব্দ আমার শীতলতাকে একেবারে পাহাড়ের
চুড়োয় পাঠিয়ে দিতে পারে
আগে কখনও আমি জানিনি যে কিছু মোহন শব্দের গায়ে চুমু খেতে খেতে আমি রাতকে
ভোর করতে পারি।


সময় – তসলিমা নাসরিন

রাত তিনটেয় ঘুম ভেঙে গেলে এখন আর বিরক্ত হই না
রাতে ভালো ঘুম না হলে দিনটা ভাল কাটে না – এমান বলে লোকে ।
দিন যদি ভাল না কাটে তাহলে কি কিছু যায় আসে !
আমার দিনই বা কেন , রাতই বা কেন ?
দিন দিনের মতো বসে থাকে দূরে , আর রাত রাতের মতো ,
ঘুমিয়ে থাকার গায়ে মুখ গুঁজে গুঁটি গুঁটি শুয়ে থাকে জেগে থাকা ।

এসব দিন রাত , এসব সময় , এসব বিয়ে আমার করার কিছুই নেই ,
জীবন আর মৃত্যু একাকার হয়ে গেলে কিছু আর করার থাকে না কিছু না ।
আমি এখন মৃত্যু থেকে জীবনকে বলে কয়েও সরাতে পারি না ,
জীবন থেকে মৃত্যুকে আলগোছে তুলে নিয়ে রাখতে পারি না কোথাও আপাতত ।


অভিমান – তসলিমা নাসরিন

কাছে যতটুকু পেরেছি আসতে, জেনো
দূরে যেতে আমি তারো চেয়ে বেশী পারি।
ভালোবাসা আমি যতটা নিয়েছি লুফে
তারো চেয়ে পারি গোগ্রাসে নিতে ভালোবাসা হীনতাও।

জন্মের দায়, প্রতিভার পাপ নিয়ে
নিত্য নিয়ত পাথর সরিয়ে হাঁটি।

অতল নিষেধে ডুবতে ডুবতে ভাসি,
আমার কে আছে একা আমি ছাড়া আর ?


রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহকে লেখা চিঠি – তসলিমা নাসরিন

প্রিয় রুদ্র,

প্রযত্নেঃ আকাশ,
তুমি আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখতে বলেছিলে। তুমি কি এখন আকাশ জুড়ে থাকো? তুমি আকাশে উড়ে বেড়াও? তুলোর মতো, পাখির মতো? তুমি এই জগত্সংসার ছেড়ে আকাশে চলে গেছো। তুমি আসলে বেঁচেই গেছো রুদ্র। আচ্ছা, তোমার কি পাখি হয়ে উড়ে ফিরে আসতে ইচ্ছে করে না? তোমার সেই ইন্দিরা রোডের বাড়িতে, আবার সেই নীলক্ষেত, শাহবাগ, পরীবাগ, লালবাগ চষে বেড়াতে? ইচ্ছে তোমার হয় না এ আমি বিশ্বাস করি না, ইচ্ছে ঠিকই হয়, পারো না। অথচ এক সময় যা ইচ্ছে হতো তোমার তাই করতে। ইচ্ছে যদি হতো সারারাত না ঘুমিয়ে গল্প করতে – করতে। ইচ্ছে যদি হতো সারাদিন পথে পথে হাটতে – হাটতে। কে তোমাকে বাধা দিতো? জীবন তোমার হাতের মুঠোয় ছিলো। এই জীবন নিয়ে যেমন ইচ্ছে খেলেছো। আমার ভেবে অবাক লাগে, জীবন এখন তোমার হাতের মুঠোয় নেই। ওরা তোমাকে ট্রাকে উঠিয়ে মিঠেখালি রেখে এলো, তুমি প্রতিবাদ করতে পারোনি।

আচ্ছা, তোমার লালবাগের সেই প্রেমিকাটির খবর কি, দীর্ঘ বছর প্রেম করেছিলে তোমার যে নেলী খালার সাথে? তার উদ্দেশ্যে তোমার দিস্তা দিস্তা প্রেমের কবিতা দেখে আমি কি ভীষণ কেঁদেছিলাম একদিন! তুমি আর কারো সঙ্গে প্রেম করছো, এ আমার সইতো না। কি অবুঝ বালিকা ছিলাম! তাই কি? যেন আমাকেই তোমার ভালোবাসতে হবে। যেন আমরা দু’জন জন্মেছি দু’জনের জন্য। যেদিন ট্রাকে করে তোমাকে নিয়ে গেলো বাড়ি থেকে, আমার খুব দম বন্ধ লাগছিলো। ঢাকা শহরটিকে এতো ফাঁকা আর কখনো লাগেনি। বুকের মধ্যে আমার এতো হাহাকারও আর কখনো জমেনি। আমি ঢাকা ছেড়ে সেদিন চলে গিয়েছিলাম ময়মনসিংহে। আমার ঘরে তোমার বাক্সভর্তি চিঠিগুলো হাতে নিয়ে জন্মের কান্না কেঁদেছিলাম। আমাদের বিচ্ছেদ ছিলো চার বছরের। এতো বছর পরও তুমি কী গভীর করে বুকের মধ্যে রয়ে গিয়েছিলে! সেদিন আমি টের পেয়েছি।

আমার বড়ো হাসি পায় দেখে, এখন তোমার শ’য়ে শ’য়ে বন্ধু বেরোচ্ছে। তারা তখন কোথায় ছিলো? যখন পয়সার অভাবে তুমি একটি সিঙ্গারা খেয়ে দুপুর কাটিয়েছো। আমি না হয় তোমার বন্ধু নই, তোমাকে ছেড়ে চলে এসেছিলাম বলে। এই যে এখন তোমার নামে মেলা হয়, তোমার চেনা এক আমিই বোধ হয় অনুপস্থিত থাকি মেলায়। যারা এখন রুদ্র রুদ্র বলে মাতম করে বুঝিনা তারা তখন কোথায় ছিলো?

শেষদিকে তুমি শিমুল নামের এক মেয়েকে ভালোবাসতে। বিয়ের কথাও হচ্ছিলো। আমাকে শিমুলের সব গল্প একদিন করলে। শুনে … তুমি বোঝোনি আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো। এই ভেবে যে, তুমি কি অনায়াসে প্রেম করছো! তার গল্প শোনাচ্ছো ! ঠিক এইরকম অনুভব একসময় আমার জন্য ছিলো তোমার! আজ আরেকজনের জন্য তোমার অস্থিরতা। নির্ঘুম রাত কাটাবার গল্প শুনে আমার কান্না পায় না বলো? তুমি শিমুলকে নিয়ে কি কি কবিতা লিখলে তা দিব্যি বলে গেলে! আমাকে আবার জিজ্ঞেসও করলে, কেমন হয়েছে। আমি বললাম, খুব ভালো। শিমুল মেয়েটিকে আমি কোনোদিন দেখিনি, তুমি তাকে ভালোবাসো, যখন নিজেই বললে, তখন আমার কষ্টটাকে বুঝতে দেইনি। তোমাকে ছেড়ে চলে গেছি ঠিকই কিন্তু আর কাউকে ভালোবাসতে পারিনি। ভালোবাসা যে যাকে তাকে বিলোবার জিনিস নয়।

আকাশের সঙ্গে কতো কথা হয় রোজ! কষ্টের কথা, সুখের কথা। একদিন আকাশভরা জোত্স্নায় গা ভেসে যাচ্ছিলো আমাদের। তুমি দু চারটি কষ্টের কথা বলে নিজের লেখা একটি গান শুনিয়েছিলে। “ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি দিও”। মংলায় বসে গানটি লিখেছিলে। মনে মনে তুমি কার চিঠি চেয়েছিলে? আমার? নেলী খালার? শিমুলের? অনেক দিন ইচ্ছে তোমাকে একটা চিঠি লিখি। একটা সময় ছিলো তোমাকে প্রতিদিন চিঠি লিখতাম। তুমিও লিখতে প্রতিদিন। সেবার আরমানিটোলার বাড়িতে বসে দিলে আকাশের ঠিকানা। তুমি পাবে তো এই চিঠি? জীবন এবং জগতের তৃষ্ণা তো মানুষের কখনো মেটে না, তবু মানুষ আর বাঁচে ক’দিন বলো? দিন তো ফুরোয়। আমার কি দিন ফুরোচ্ছে না? তুমি ভালো থেকো। আমি ভালো নেই।

ইতি,
সকাল

পুনশ্চঃ আমাকে সকাল বলে ডাকতে তুমি। কতোকাল ঐ ডাক শুনি না। তুমি কি আকাশ থেকে সকাল, আমার সকাল বলে মাঝে মধ্যে ডাকো? নাকি আমি ভুল শুনি?






একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন