বিবিধ — সুকুমার রায়ের ছড়া

 

বিবিধ

করে তাড়াহুড়ো বিষম চোট্‌
কিনেছি হ্যাট্‌ পরেছি কোট্‌,
পেয়েছি passage এসেছে boat,
বেঁধেছি তল্পি তুলেছি মোট্‌,
বলেছে সবাই, "তা হলে ওঠ্‌,
আসান্‌ এবার বিলেতে ছোট্‌।"
তাই সভা হবে, বিদায় ভোট্‌,
কাঁদ কাঁদ ভাবে ফুলিয়ে ঠোট্‌
হেথায় সকলে করিবে জোট্‌
(প্রোগ্রামটুকু করিও Note)।

প্রোগ্রাম-
শুক্র সন্ধ্যা সঠিক সাত-
আহার, আমোদ, উল্কাপাত।


আসছে কাল, শনিবার
অপরাহ্ণ সাড়ে চার,
আসিয়া মোদের বাড়ি,
কৃতার্থ করিলে সবে
টুলুপুষু খুশি হবে।


(হুবহু) নকল করি
    লেখাটি আমার
সভায় (বাহবা) নিল
   লজ্জা নাহি তার।
ধনীরা (খামখা) কেন
    ধন লয়ে যায়।
যে ধন (বিলাবি) যেন
    দুখী জনে পায়।

[বন্ধনীর ভিতরের শব্দগুলি যে-দিক থেকেই পড়া যাক অপরিবর্তিত থাকে। ]


লর্ড কার্জন অতি দুর্জন বঙ্গগগন শনি
কূট নিঠুর চক্রী চতুর উগ্র গরল ফণী। ...


আমরা দিশি পাগলার দল,
দেশের জন্য ভেবে ভেবে হয়েছি পাগল,
(যদিও) দেখতে খারাপ, টিকবে কম, দামটা একটু বেশি
(তাহোক) এতে দেশেরই মঙ্গল।


আজকে আমার প্রদীপখানি ম্লান হয়েছে আঁধার মাঝে
আজকে আমার প্রাণের সুরে ক্ষণে ক্ষণে বেসুর বাজে
আজকে আমার আশার বাণী মৌন আছে সংশয়েতে
                                                ...[অসমাপ্ত]


সৃষ্টি যখন সদ্য কাঁচা, অনেকখানি ফাঁকা
বিশ্বকর্মা নিলেন ছুটি একটি বছর ছাঁকা।
ঘুম জমে না, পায় না ক্ষিদে, শরীর কেমন করে,
ডাক্তারেরা দিলেন হুকুম বিশ্রামেরি তরে।
আইন মাফিক নোটিশ নোটিশ দিয়ে অগ্রহায়ণ মাসে
গেলেন তিনি মর্তলোকে স্বাস্থ্য লাভের আশে।


বৃষ্টি বেগ ভরে রাস্তা গেল ডুবিয়ে
ছাতা কাঁধে, জুতা হাতে, নোংরা ঘোলা কালো,
    হাঁটু জল ঠেলি চলে যত লোকে।
রাস্তাতে চলা দুষ্কর মুস্কিল বড়
অতি পিচ্ছিল, অতি পিচ্ছিল, অতি পিচ্ছিল, বিচ্ছিরি রাস্তা,
    ধরণী মহা-দুর্গম কর্দম-গ্রস্তা
    যাওয়া দুষ্কর মুস্কিল রে ইস্কুলে,
সর্দি জ্বর, বৃদ্ধি বড়, নিত্যি লোকে বদ্যি ডেকে
    তিক্ত বড়ি খায়। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন