মাকিদ হায়দার এর কবিতা সংগ্রহ

মাকিদ হায়দার বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান কবি। ১৯৪৭ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পাবনা জেলার দোহারপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।


জুতা বিষয়ক – মাকিদ হায়দার 

 বাবা হরিপদ,

চিঠি পাইবামাত্র জুতা কিনিবা,
আমি জানি তোমার পদযুগলে কোন জুতা নাই
জুতা ছাড়া ঢাকা শহরে তুমি চলাফেরা
করিতেও পারিবেনা।
শুনিলাম জুতার দাম আগের মত নাই
আরো শুনিলাম ঢাকা শহরের
একদল লোক
সারা বছরই
রাস্তায়, খাল-খন্দক কাটিতে পছন্দ করে
তাই ভয় হয় তুমি যদি
সেই খানা-খন্দকে একবার পড়িয়া যাও
তোমাকে ডাঙ্গায় তুলিবার মতো লোকজন আজকাল
নাই বলিলেই চলে
তাই তোমাকে বলিতেছি তুমি দুই জোড়া জুতা কিনিবা।
একজোড়া তোমার জন্য
আরেক জোড়া মুক্তিযুদ্ধের নামে।
মুক্তিযুদ্ধ যেন সেই জুতা পায়ে দিয়া তোমার সাথেই
আমাদের দোহার পাড়ার বাড়ীতে একবার আসিয়া
বেড়াইয়া যায়।
ইতি
তোমার মা। 



এখন থেকে – মাকিদ হায়দার

(কবি মাহমুদ আল জামানকে, শ্রদ্ধাসহ)

প্রথমে ওয়েব সাইটে দেখুন,
না হলে ফ্যাক্সে খোঁজ নিন৷
তারপরেও যদি না পাওয়া যায়
তাহলে সার্চ করুন ইন্টারনেটে৷
এই বলে তিনি
দ্রুত পায়ে চলে এলেন
অফিসের গেটে
দাঁড়ানো গাড়ীর কাছে৷

বোশেখের তপ্তরোদে
চারিদিক যখন পুড়ে ছারখার
তখন কাউকে কিছু না জানিয়ে
গাড়ীর মালিক
পায়ে হেঁটে
কিছুদূর যেতে না যেতেই
সেই লোকটির সাথে দেখা,
যাকে তিনি
একটু আগেই ধরতে চেয়েছিলেন
ইন্টারনেটে
ফ্যাক্সে
ওয়েব সাইটে৷

ধৃত লোকটি বললেন–কণ্ঠ ভোটে
পার্লামেন্ট পাশ করে দিয়েছে
এখন থেকে আমরা সকলেই
গাইতে পারবো

পুরাতন জাতীয় সংগীত৷




আমরা ক-ভাই – মাকিদ হায়দার

কর্তব্যপরায়ন হিসেবে এই মহল্লার সকলেই
সর্বাগ্রে উচ্চারণ করে
আমাদের নাম৷

দেশ বিদেশে যে কেউ এসে জিজ্ঞেস করলেই
একবাক্যে সকলেই উচ্চারণ করেন
ছেলে গুলো ভালো৷
কর্তব্য পরায়ন৷
নির্দেশ মতো সব কিছু করে৷

সমপ্রতি একদল লোক মধ্যপ্রাচ্য থেকে এসেছেন
পর্যবেক্ষক হয়ে৷
আমরা ঠিক মতো মাতৃপরায়ণ প্রতি
অবহেলা কতটুকু করি
সেই সাথে বিরোধিতা কতটুকু
বহুটুকু শুধু দেখবেন
পর্যবেক্ষক দল৷

কর্তব্য পরায়নে এ মহল্লায় অদ্বিতীয় বলে
আশা করি আমরা ক-ভাই
অচিরেই পেয়ে যাবো৷

হীরকের মালা৷



তোমার পাশে – মাকিদ হায়দার

ডাকবে শুধু আমায় তুমি
থাকবে শুধু আমার পাশে
থাকবে তুমি।

কাঁদলে শুধু কাঁদবো আমি
বিজন রাতে একলা আমি
তোমার পাশে।

জোনাক আলো জ্বালবো আমি
যেথায় তুমি একলা থাকো
আমায় ছেড়ে।

ডাকবে লোকে হঠাৎ করে
সাতসকালে সাঁঝের বেলা
তখন তুমি বাসর ছেড়ে
একপা দু’পা তিনপা করে
বেড়িয়ে এলে দেখতে পাবে।

দাঁড়িয়ে আছি তোমার পাশে।








একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন