লভিয়া প্লাথ তাঁর শেষ, অর্থাৎ ৩০তম জন্মদিনে ইংরেজিতে একটা কবিতা লিখেছিলেন। কবিতাটি তাঁর সেই বিখ্যাত কবিতা, যার শিরোনাম ছিল LADY LAZARUS। দিনটি ছিল ১৯৬২ সালের ২৭ অক্টোবর। এর একবছর পরেই তিনি স্বেচ্ছামৃত্যুকে বেছে নেন। এখানে প্রথমে কবিতাটির অনুবাদ এবং পরে মূল কবিতাটি প্রকাশ করা হলো।
অনুবাদ করেছেন যিনি
বর্ণালী সাহার জন্ম ১৯৮৩ সনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইন্সটিটিউট থেকে স্নাতক এবং মেলবোর্ন বিজনেস স্কুল (মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়া) থেকে ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষা সমাপ্ত করেন। গদ্যভাষায় প্রভাব বিস্তার করে বাজার, সঙ্গীত, সংযোগ এবং প্রবাস।
শৈশব থেকে রাগসঙ্গীতের চর্চা করছেন – শিক্ষার্থী এবং গবেষক হিসাবে কলকাতার আইটিসি সঙ্গীত রিসার্চ একাডেমির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ঢাকা, লন্ডন এবং মেলবোর্নে একাধিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্বস্থানীয় পরামর্শক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে মেলবোর্নে বসবাস করছেন।
আকাম করিনু শুন,
যেন করি পুনঃপুনঃ
হরেক দশকে একই কার্য্য একবার –
চর্ম্মচাক্ষুষ গো চলি
অলৌকিক কিরণমালী
বাতিদান আমি, নরচর্ম্মছদ (১) আমার
ডান পা দিয়া গো শুক,
কাগজ চাপিও (২), মুখ
শব-ঢাকা ক্ষৌমবস্ত্র (৩) যেন অঙ্গহীন।
ত্রাসিনু পরান তোর?
হে অনঙ্গ অরি মোর –
ছাড়াইয়া লহ ছাল, দেহের অজিন।
নাসা-চক্ষুগহ্বর,
দন্তপাঁতি দেখি’ ডর?
চুকাগন্ধ নিশাস গো দিনেকে মিলাবে।
যে বিবরে গোর দিলি,
খেল তা যে মাংসগুলি,
সে মাংস আমার ‘পরে জোটকিয়া যাবে।
হাস্যময়ী আমি নারী,
দশাধিকা এক কুড়ি।
নয়টি মরণ মম যেন গো বিড়াল।
তিরিশে পড়িনু তাই
তৃতীয় জনম। ছাই,
প্রতিজন্মে নাশা এই দশক-জঞ্জাল।
নিযুত গো রশ্মিসুতা –
তামাশা দেখে জনতা
ঠেলা-ধাক্কা-গুঁতাসনে হুড়াহুড়ি ক’রে
দাঁতেতে মকাই কাটি’।
দিগম্বরী হৈয়া উঠি;
হস্তপদাদির খোসা খুলিয়া গো ধরে।
দেখ গো সুধীসকল,
হস্ত ও জানুযুগল।
হৈয়া উঠিনু যদি অস্থিচর্ম্মসার –
তথাপি আমি সে নারী,
দশে যে গেছিল মরি’,
প্রথম উত্থান ছিল দুর্ঘটনা তার।
দ্বিতীয়বারেতে ভেবে
‘ফিরিব না কভু এবে’,
স্থাণুভাবে ঝিনুকের খোল গো বুঁজিল।
উহাদের আবাহন
চলিল অনেকক্ষণ –
মুকুতা-পিছল কীড়া খুঁটিয়া ফেলিল।
মৃত্যু এক শিল্প তো,
সর্বকর্ম যেই মতো।
বড় ভালো পারি আমি, বড় অনুপম –
এমত করি গো শুক –
নারকী-বাস্তবানুগ,
কায়কার্য্য বলা যায় ইহাকেই মম।
প্রকোষ্ঠে ঘুসিয়া মরা
সহজ। রহিয়া স্থিরা
অতঃপর দিনমানে নাটকীয়তায়
ফেরা, পুনরুত্থান –
একই মুখ, একই স্থান,
অদ্ভুত মানিয়া একই দৈত্যেরা চেঁচায়ঃ
‘চমৎকার, চমৎকার এ!’
মূরছি গো সে চিৎকারে।
দর্শনী পুরিতে হয় গো বদস্তুর
দেখিতে আমার ক্ষত,
শুনিতে হৃদির যত
স্বীকারোক্তি; টিকেট কাটে গো সুরাসুর।
দিতে হয় নজরানা
একটি স্পর্শ, শব্দকণা,
কিম্বা একফোঁটা রক্ত ভোগ করিতেও –
একগাছিখানি কেশ,
একখণ্ড চীর-বেশ।
শুন শুন দৈত্যগুরু, শত্রু, দানো, দেওঃ
রচনা করেছ মোরে
সামগান জ্ঞান করে।
তব শিরোরত্ন আমি, সুবর্ণশিশু;
গলি’ যাই চিৎকারি,
ঘুরে শুই, আর পুড়ি।
জানি কোন্ দায়ে, স্বামী, উদ্বিগ্নজিগীষু
হৈয়া তুমি বারেবারই
ছাই ঘুঁটে লাড়িচাড়ি
দেখ ছাই, ছাই ছাড়া নাহি কিছু তায়
হাড়-মাস; এক তাল
সাবান (৪), শুধু বহাল
বিয়ার অঙ্গুঠি, দাঁত বাঁধানো সোনায় (৫)।
পিতাশ্রী, দেবতাশ্রী,
রাক্ষস ও পিচাশশ্রী
সাবধান, সাবধান,সবে সাবধান।
ভস্ম হৈতে বাহিরিয়া
রক্তকেশ আলুলিয়া
পুং-নর আমি খাই বায়ুর লাখান।
টীকা
১ নাৎসি-বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে ইহুদি-নিধনের পর মৃতদের কারো কারো চামড়া দিয়ে লণ্ঠনের ঢাকনা (ল্যাম্পশেইড) বানানো হয়েছিল।
২ অনুরূপ অভিযোগ : মৃতদের কারো কারো পায়ের হাড় দিয়ে পেপারওয়েইট বানানো হয়েছিল।
৩ জুইশ লিনেন : বাইবেলে বর্ণিত কাপড় যা শবদেহ ঢাকার কাজে ব্যবহার হতো।
৪ নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে নিহত মানুষের দেহের চর্বি দিয়ে সাবান বানানোর অভিযোগ ছিল।
৫ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে নিহত ইহুদিদের দগ্ধ লাশের দাঁত থেকে সোনার ফিলিং খুলে নেওয়া হতো। কথিত আছে হিটলার নিজের দাঁত মৃত ইহুদিদের দাঁত থেকে খুলে নেওয়া সোনা দিয়ে বাঁধিয়েছিলেন।
ইংরেজিতে লেখা সিলভিয়া প্লাথের মূল কবিতা
Lady Lazarus
BY SYLVIA PLATH
I have done it again.
One year in every ten
I manage it—
A sort of walking miracle, my skin
Bright as a Nazi lampshade,
My right foot
A paperweight,
My face a featureless, fine
Jew linen.
Peel off the napkin
O my enemy.
Do I terrify?—
The nose, the eye pits, the full set of teeth?
The sour breath
Will vanish in a day.
Soon, soon the flesh
The grave cave ate will be
At home on me
And I a smiling woman.
I am only thirty.
And like the cat I have nine times to die.
This is Number Three.
What a trash
To annihilate each decade.
What a million filaments.
The peanut-crunching crowd
Shoves in to see
Them unwrap me hand and foot—
The big strip tease.
Gentlemen, ladies
These are my hands
My knees.
I may be skin and bone,
Nevertheless, I am the same, identical woman.
The first time it happened I was ten.
It was an accident.
The second time I meant
To last it out and not come back at all.
I rocked shut
As a seashell.
They had to call and call
And pick the worms off me like sticky pearls.
Dying
Is an art, like everything else.
I do it exceptionally well.
I do it so it feels like hell.
I do it so it feels real.
I guess you could say I’ve a call.
It’s easy enough to do it in a cell.
It’s easy enough to do it and stay put.
It’s the theatrical
Comeback in broad day
To the same place, the same face, the same brute
Amused shout:
‘A miracle!’
That knocks me out.
There is a charge
For the eyeing of my scars, there is a charge
For the hearing of my heart—
It really goes.
And there is a charge, a very large charge
For a word or a touch
Or a bit of blood
Or a piece of my hair or my clothes.
So, so, Herr Doktor.
So, Herr Enemy.
I am your opus,
I am your valuable,
The pure gold baby
That melts to a shriek.
I turn and burn.
Do not think I underestimate your great concern.
Ash, ash—
You poke and stir.
Flesh, bone, there is nothing there—
A cake of soap,
A wedding ring,
A gold filling.
Herr God, Herr Lucifer
Beware
Beware.
Out of the ash
I rise with my red hair
And I eat men like air.
সোর্সঃ তীরন্দাজ