হেমমেত্মর দিন
প্রভু, এই তো সময়
গ্রীষ্ম বড় দীর্ঘ ছিল
এবার সূর্যঘড়ির উপর
নামুক তোমার ছায়া
এবং বিসত্মীর্ণ প্রান্তরে
ঘূর্ণিত হোক উন্মত্ত বাতাস।
আনত ফলগুলি তুমি পূর্ণতর করো
তারা শেষত্ব প্রাপ্ত হোক তোমার আজ্ঞায়
তবুও দুটি দক্ষেণ দিন এবং শেষ মধুরতা
তাদের লুব্ধ করুক ভরা আঙুরগুচ্ছ।
সে এখন নির্মাণ করবে না যার কোনো গৃহ নেই
সে এখন নিঃসঙ্গ… এবং আরো বহুদিন
শেষ রাত্রে বসা, চিঠি লেখা আর পুনরায়
প্রত্যাবর্তন সেই অস্থির যাত্রায়
পার্কে আঁধারে পাতাঝরা ছায়াচ্ছন্ন রাস্তায়।
অনুবাদক : সমর রায়
হেমন্তসন্ধ্যা
বাতাস এল চাঁদের থেকে
আর সহসা আক্রান্ত হল বৃক্ষরাজি,
এবং একটি পাতা ঘুরতে ঘুরতে
ঝরার সময়ে পথ খুঁজলো।
লণ্ঠনের মৃদু আলোর মধ্য দিয়ে
বহুদূরের গাঢ় কৃষ্ণ নিসর্গ-
জোর করে প্রবেশ করলো
সিদ্ধান্তহীন শহরের ভিতর।
অনুবাদক : সুনন্দা বসু ও শুভরঞ্জন দাশগুপ্ত
প্রাক্বসমেত্মর গান
কাঠিন্য অদৃশ্য
হঠাৎ নেমে এল দাক্ষেণ্য
উন্মুক্ত প্রান্তরের ধূসরতার উপর।
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলধারা
তাদের গতি পালটালো
এবং আকাশ থেকে নেমে আসা
ভালবাসার ছোঁয়াগুলি
স্পর্শ করলো ভূমি।
গভীর পথগুলি প্রবেশ করলো
মাটির নিসর্গের ভিতর দিয়ে
এবং সহসা পত্রহীন গাছের মধ্যেই-
তার উত্তরণ ও প্রকাশ।
অনুবাদক : সুনন্দা বসু ও শুভরঞ্জন দাশগুপ্ত
উৎসর্গ
আমাদের সর্বোত্তম কাজ হল :
এমন একটি লিখিত ভাষার সৃষ্টি
যা কিনা আমাদের অশ্রু সহ্য করতে পারবে
এবং আমাদের সামনে আবার সৃষ্টি করবে
-সুস্পষ্ট, নির্মাণ, সুনিশ্চিত-
রমণীয় বিদায়সম্ভাষণ তাদেরই জন্য
যারা সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিল।
অনুবাদক : সুনন্দা বসু ও শুভরঞ্জন দাশগুপ্ত
বিবাহ
সে এখন বিষণ্ণ
সে নীরব, শব্দহীন, নিঃসঙ্গ।
দেখো – সে যন্ত্রণায় বিদ্ধ।
তোমার রাত্রিগুলি
তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল
অনেকটা স্থানচ্যুত পাথরের মতো
আর তার রাত্রিগুলি ছিল মৃদু উত্তেজনাময়।
তোমার ভোঁতা কামনা দিয়ে তুমি শতবার
তাকে বিনষ্ট ও বিষাক্ত করেছিলে।
অবশ্য তুমি শুধু একবার
যেন মধ্যযুগের দাতা হয়েছিলে
এবং নীরব নিঃশব্দ আঁধারে
তার পাশে নতজানু ছিলে,
এখানেই তোমার পৌরুষ
তোমার নিজস্ব বৃত্ত থেকে নিষ্ক্রমণ।
অনুবাদক : সুনন্দা বসু ও শুভরঞ্জন দাশগুপ্ত