নির্মলেন্দু গুণ এর কবিতা: আমার জন্ম



আমার জন্ম 

তপ শেষে যখন বাল্মীকি তাঁর মুদিত নয়ন  

 খুলিলেন,দেখিলেন লব নেই;চোখের সমুখে  

 দিগন্তবিস্তৃত ধু-ধু শূন্য তপোবন প’ড়ে আছে৷  

 ‘কোথা লব, কোথা লব? ফিরে আয়’ ডাকিলেন মুনি,  

 ফিরে এলো প্রতিধ্বনি,শিশু লব দিলো না উত্তর৷  

 এ কোন্ বিধির লীলা,ভাবিলেন চিন্তক্লীষ্ট মুনি:  

 ‘শুন্য হাতে কী মুখে যাইব আজ সেই পূণ্যাশ্রমে,  

 – যেখানে অকল্পনীয় লব-হীন সীতার জীবন৷’   

  

 যোগসিদ্ধ ঋষি তিনি, দৈববিদ্যা করায়ত্ত তাঁর,  

 যদি সেই তপলব্ধ দৈবজ্ঞান করিলে প্রয়োগ  

 মাতৃকোল পূর্ণ হয়,তৃপ্ত করে সীতার হদৃয়–  

 তবে তাই হোক–,মহামন্ত্রে জন্ম নিল দেবশিশু৷  

 পেলো প্রাণ-চঞ্চলতা অবিকল লবের মতোন৷  

 যেহেতু নির্মিত কুশে,তার নাম রাখা হলো কুশ৷   

  

 না আমি নির্মিত নই বাল্মীকির কাল্পনিক কুশে,  

 আমাকে দিয়েছে জন্ম রক্তঝরা অমর একুশে৷  

  


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন