হাসান রোবায়েত এর ১০টি কবিতা



 সাবকনসাস

ঝরা ভাব নিয়ে একটা সামান্য পাতা 

নুয়ে আছে হিংসার উপর— 

কানা বিলাই তার চিৎকার শুনবে বলে 

ঝিম ধরে বসে আছে লোমে


মাবুদ, ভাষা দাও তাকে 

ম্যাজিক রিয়ালিজম আর কত দিন 

সইবে প্রভূত ভর এই বাস্তবতার কালে! 

আমাদের সমস্ত পয়সাই তো হাওয়া হয়ে গেল 

ব্রোমাজিপাম কিনে— 


পাতাটা পড়লে অন্তত খস খস শব্দ হতো জুতায়—







দেখা

তোমার সঙ্গে না হওয়া সেই দেখা

বৃষ্টি-শেষে নিরর্থ কাঞ্চনে 

যাচ্ছে ভেসে রৌদ্রপরম্পরায়  

বাতাস ছুঁয়ে গুল্মলতার বনে—


ভঙ্গিমা যার চাতুর্যময় পায়ে

সম্মোহনে শঙ্খচুড়ও শ্রোতা

কপাট খুলে আত্মঅভিপ্রায়ে

দাঁড়িয়ে আছে তোমার জটিলতা 


রাত্রি-ভেজা রাস্তা ছলাৎছলে

ঊর্দ্ধে বাজে স্মরণাতীত আলো

তোমার সঙ্গে আমার দেখা হওয়া

বজ্রপাতে হঠাৎই চমকালো



জান্নাত 

কেউ ক্যালেন্ডার উল্টাচ্ছে না 

তবু পুরাটাই বুধবার 

যেন হেলে পড়লে পারিবারিক হবে ফুল—


আর, একেকটা ছুটির মধ্যে হেঁটে যাবে মধুবালা 


যেন তাকালেই

সমস্ত রুম্মানা নিয়ে হেসে উঠছে জান্নাত



আহ্ মোহাম্মাদ! আহ্ মোহাম্মাদ! 

একটা ছোট মাঠ। পাশের জঙ্গল থেকে উড়ে আসছে নীরবতার আওয়াজ। অ্যাকাশিয়ার শান্ত হলুদ ফুল প্রেইরির একাকীত্ব নিয়ে তাকিয়ে আছে দূরের মেশিন ঘরটার দিকে—অর্জুন পাপড়ির মতো বেগনি হাওয়ায় ছেয়ে যাচ্ছে গোরস্থান—মৃত্যুর সুমসাম ঝরাপাতা এখানে নিয়ে আসে বহুযুগ-বিপন্নতার ছায়া—জানালার কপাটগুলো তিরতির করছে দূরে—রাত নামছে, টিউলিপ খেতের উপর যেভাবে নেমে আসে নৈঃসঙ্গ্যের রঙ—এইসব দৃশ্যের পাশে মায়া বাড়ে—যেন মোহাম্মাদের সেই রাত ফিরে আসছে গুল্মের মন্দ্রিত ছায়ায়—


গভীর অন্ধকার—মধ্যরাতের দিকে নবীজি চলে গেলেন গোরস্থানে—সমস্ত কবর হরিণের তন্দ্রার মতো সুনসান—যেন মৃতদের কণ্ঠস্বরে টুংটাং করছিল নীরবতা, অজস্র কণ্ঠের বিলাপ, কান্না ও হাসির মীড় যেন ভেসে আসছে কবরের থেকে—রহস্যম্লান এইসব নম্র কথারা ম ম করছিল নবীজির কানে—তিনি কথা বলছিলেন মৃতদের সাথে হৃদয়ের বাক্য দিয়ে—


আহ্ মোহাম্মাদ! সমস্ত দরুদ যেন ফুটে আছে সমুদ্রের ধারে বেলাডোনা হয়ে—আহ্ মোহাম্মাদ! এই গণ্ডগ্রামের বিমলিন গোরস্থানের অপরাহ্ণে যেন ভেসে আসছে সেইসব ঘ্রাণ যারা তায়েয়েফের আঙুর ফুলের চেয়েও সান্দ্র—


আহ্ মোহাম্মাদ! আহ্ মোহাম্মাদ! আমাদের রাত্রিও যেন মেঘের মতো একে অপরের অন্ধকার রাতকে মেঘাচ্ছন্ন করেছে বহুকাল—




রেহানা পারভীন 


জীবন মানে যেন রেহানা পারভীন

সে গেছে টমেটোর মতন লাল হয়ে 

তাকেও জানে মেঘ ভুলবে একদিন


নীরবে দূরে গেলে মানুষও মনোলীন 

শূন্য মাঠ ভাসে বাতাসে পরাজয়ে 

জীবন মানে যেন রেহানা পারভীন—


তবে কি এ জীবন রেহানা পারভীন? 

সময় ফুরে গেলে শাওনও যাবে ক্ষয়ে 

তাকেও জানে হাওয়া ভুলবে একদিন—


আমার প্রতিবেশী আনোখা চিরদিন

কোথাও দূরে তার নৌকা যায় বয়ে 

জীবন মানে যেন রেহানা পারভীন 


ও হাওয়া উড়ে যাও, পাতায় কেঁপে ক্ষীণ 

হাওড়ে ধানপাশে চোখের সবিনয়ে 

তাকেও জানে মন ভুলবে একদিন


কসম মার্মারি আফরিঁ আফরিন

আঙুর বাগানের নির্জনতা সয়ে 

জীবন মানে বলি রেহানা পারভীন

তাকেও জানে মন ভুলবে একদিন




আম্মা মেজো মেয়ে, আম্মা কাঁদে খুব


শরৎকাল এলে দুনিয়া বহুদূর

অহেতু নিয়ে আসে শূন্য বুধবার 

নানিকে দেখি একা হাঁসের বন ধরে

কোথায় হেঁটে যায়—সে দেশে-দ্রাঘিমার  

মাঠের সন্ধ্যা কি কখনো ব্যথা ঘিরে 

পুরনো চকিটাতে ঘুমায় সহজিয়া

সে দেশ মিদরাসে—? আনোখা নদীতীরে—?

যেখানে আয়াতুল কুরসি লেখা পাতা

জামের নয়া ফুলে ছড়িয়ে পড়ে আয়ু 

রঙীন হাঁসিনীরা তারার শিস গুনে 

পেরিয়ে ধুলাপথ সান্দ্র হেমবায়ু 

কোথায় চলে গেছে, নানিও নিশ্চুপ— 


আম্মা মেজো মেয়ে, আম্মা কাঁদে খুব—


নানাকে দেখি নাই মামাও মরে গেছে

এমনি শরতের বৃহস্পতিবার 

কসকো সাবানের গন্ধ উড়তেছে

নিমের ফুল ঝরে সফেদ জানাজার

তামাটে সন্ধ্যায় নানির ছোট ঘরে 

টেবিলে হারিকেন বিষাদে আলোহীন 

একটা শিশি ঝোলে স্মৃতির মতো করে

আকাশে জ্বল ওঠে বাকির কেরোসিন 

জামের নিধু বনে সেসব হাঁসেরাও 

লালের পায়ে পায়ে বাজছে সন্তুর 

সে দেশ মায়ারোদে—? কেনানে ছোট গাঁও—? 

খালারা আসে নাই তাদের বাড়ি দূর—

 

আম্মা মেজো মেয়ে, আম্মা কাঁদে খুব—


একটা ছোট তাক যেখানে ছিল হাঁস

মার্কা নারিকেল তেলের কৌটাটা 

অতীতকালে এক ভোটের ব্যবহৃত 

ধূসর পোস্টার রয়েছে ঘরে সাঁটা 

মাটির চুলা খাঁ খাঁ আমাকে ডাকবে না

তারার খুলি থেকে একলা হয়রান 

হাঁসের বনে কেউ সুদূরে চলে গেছে

সে দেশ পারথিয়া—? ন্যুব্জ খোরাসান—? 

আম্মা বসে আছে লাউয়ের পাতা বুঁটে 

আকাশমণি ফুলে হীরার শিশিরেরা

কাঁপছে রাতভর অমরাবতী যেন 

এ মাঠে শুয়ে আছে নানির গন্ধেরা—


আম্মা মেজো মেয়ে, আম্মা কাঁদে খুব—


আনোখা নদী

তবুও প্রয়াস (২০১৮, ভারত)

বইটা কিনতে যোগাযোগ করুন





অপব্যায়ী ঘ্রাণ

তোমার কথা হলেই আমার বুকে

উতলে ওঠে পেখম, ভাতের মাড়

ভুল হয়ে যায় খুললে খোঁপার চিঠি

রৌদ্র-ছায়ার বিথারে সংসার—


তোমার পায়ের শব্দ কাঁপে ঝাড়ে

বুনো ফুলের অপব্যায়ী ঘ্রাণ,  

ভর্তা মাখার অমন স্বাদের আঙুল

চাটছে হাওয়া, আমার অভিমান—


টললো নদী বর্ষা ভরা রাতে

পাটের খেতে উজান হাওয়া বয়

ঝুলত তালা তোমার বাড়ি গেলে

আমার ছিল সহজতর ভয়—


কেউ কি তোমার অন্ধকারের ছায়া,

কাঁসার থালে নতুন চালের ভাত—? 

স্পর্শাতুরা তের নদীর ঢেউ

আমার ঘরে ঢুকলে অকস্মাৎ—!


বৃষ্টি পড়ে মধ্য ঘুমের তীরে

বৃষ্টি পড়ে জোড়া ভুরুর মাঝে

কার বিরহে দূরের রেডিয়োতে

একসা ভিজে শচীন কর্তা বাজে—




পরমগীত


[মোস্তফা হামেদীকে] 


ভালোবাসার পুরুষটিকে নারীর কথা


হরিণের তন্দ্রা এল করে

বাতাসে পাতার আওয়াজ ভাঙে

তারাদের ঘুমন্ত সব আলো

ঝিকিমিক করছে ঢেউয়ের গাঙে


কেটলিতে বাষ্প পুড়ে যায়

বনতল পত্রঝরা দূরে

ভেড়াদের খুরের ঘায়ে ঘায়ে

বাজল কি গোধূলি সন্তুরে—!


ম ম ঘ্রাণ তিসির খেতে হাওয়া

মৌমাছি বসছে ফুলের টোলে

নদীতে গোসল করো তুমি

শরীরে মদের বাতাস দোলে


আমাকে তিলের ফসল করো

তোমার ওই আঙুরবনের হেমে

পাতাময় দুপুর রোদের ছায়ায়

কে যেন ঘুমিয়ে গেছে প্রেমে

 

পুরুষটির প্রতি নিঃসঙ্গ রমণীগণ


তর্জমার মতন করে ফুল

এ মাঠে ফুটতেছে কোন হাওয়ায়

নিরর্থে সুরভিত রোদে

পারাবত একলা উড়ে যায়


তোমাকে বলতে গিয়ে কথা

আমাদের দিন থেমে যায় মেঘে

আমাদের কেমন করে মন

হারানো ছাতার সাথে জেগে

 

রমণীগণের সঙ্গে নারী কথা বলল


আমাকে বাসতে ভালো

চেয়েছে গাঙের হাওয়া

সেখানে বয়স আমার

পূরবীর সুরে গাওয়া


মালহারে রোদ নেমেছে

পুদিনার মতন সে ঘ্রাণ

খরগোশও ঘাড় বাঁকিয়ে

দেখতেছে চাঁদনিতে স্নান


আমি তার সান্দ্র চোখে

মহুয়ার শীতার্ততা

সরোদের গভীর কাঠে

বেজে যায় নীরবতা

 

পুরুষের প্রতি নারীর কথা


কিভাবে চুমুর ছায়ায়

দুপুরে মেঘের পাশে

ধুন্দুলে বাতাস লেগে

ঘুমালে মাঠের ঘাসে—


তোমাকে খুঁজতে গিয়ে

সোনালু ফুলের বনে

হেমন্তে ধূসরতায়

পতঝর উন্মীলনে


পেয়েছি—বৃষ্টি পড়ে

হুইসেলে রেলবাঁশিতে

আঙুলে রাত্রি ধরে

ছুঁয়ে যাও বোঁটার শীতে


স্তনেও মেঘ করেছে

বাদামি মদের শিশির

চেটে নাও মঞ্জরিতে

আশরীর শস্য—কৃষির


জমিতে ঘাসের ফুলে

ফুটেছে খনার শোলোক

আঙুরের মন্দ্র খেতে

আমাদের বিবাহ হোক—

 

নারীর প্রতি পুরুষের কথা


দয়িতা, চোখে রেখে দাও

নিসর্গে আস্তে করে

পাতাদের ঝরার আওয়াজ

এ বনে ঘুমিয়ে পড়ে


কে তাদের মধ্যঘুমে

ঝরাল বৃষ্টিতৃণ

যে গানে টোল পড়েছে

তুমি তার চোখ জুড়ানো


মোহিনী ঢেউ—এ গাঙে

কুমারীর দুধের মতো

কোমল এক বাতাস এসে

ভিজে যায় ইতস্তত

 

নারীর কথা


ডালিমের রসের মতো বিকাল

পেরিয়ে যাচ্ছে কারা ধু ধু

মেশিনে নামছে দূরে রাত

ভাষা কি অর্থে ভরা শুধু?


তোমাকে বিষণ্নতায় ভাবি

এ মনে—অন্ধ নদীর কূলে

বৃষ্টিতে ভেজে নৌকাগুলো

শিশুদের হাইয়ের মতন দুলে


ভাঁটফুল রিনরিনে দূর হাওয়ায়

হেমন্তে মাঠের পাশে আলো

এ জীবন কৃষ্ণচূড়ার রং

তুমি তার ছায়ায় টলোমলো

 

পুরুষের কথা


দুচোখে ভ্রাম্যময়ী হাওয়া

পারাবত, নীল পারাবত, ওড়ো

তোমার ওই তাকিয়ে থাকাও যেন

ঘুমন্ত হরিণ জড়সড়

 

নারীর প্রতি পুরুষের কথা


গাঙে কার উঠেছে ঢেউ

পূরবী রঙের সে চোখ

আঙুরে ফলেছে রোদ

টোলে কি ফুটল অশোক—?


সে কি আজ ভাষার মতন

ভেতরে অর্থ রেখে

হাওড়ে ধানের বাতাস

সারা মাঠ যাচ্ছে পেকে—


নাভিতে তিলের পাশে

অলক্ষ্যে নেমেছে শীত

যেন কোন সরোদ বেয়ে

নীরবে বাজছে শিশির


তুমি কার হাঁসের বনে

হেঁটে যাও হিমসকালে

শিমুলের ফুটতেছে ফুল

মনে হয় শিস বাজালে


শাড়িটা কাঁপছে মনে

যেভাবে গাঙের ঢেউয়ে

ডাহুকী দুলতে থাকে

সে জলে অপার হয়ে


তোমাকে দেখেছি সেই

প্রাচীন এক দূর শহরে

সামান্য ক্যালেন্ডারে

বারোমাস বৃষ্টি পড়ে


কামিনী অন্ধকারে

যামিনী পার হয়ে যায়

মেশিনে টারবাইনে

ঘূর্ণনে রাত্রি নামায়


শীৎকারে কেঁদে ওঠো

কী পরম এলানো মুখ

ভায়োলিন ভেঙে যেন

অজস্র উড়ছে ডাহুক

 

পুরুষের প্রতি নারীর সম্ভাষণ


পারাপার যেই সাঁকোতে

ভেঙেছে, হয় নি বলা

আমাকে দেখতে এসো

আমি যে রজঃস্বলা


হাওয়াতে নৌকা দোলে

সহসা ছলাৎ বাজে

মনে হয় গাঙের হাওয়া

তোলে সুর পাখোয়াজে


যে আমার ডালিম ফলে

দেখেছে বিত্রস্ত মৌ

আমি তার শিমুল-আকাশ

মমতায় কুমারী বউ

 

নারীর প্রতি পুরুষের কথা


লেবুফুল সন্ধ্যাতারায়

নিরলে ছড়াচ্ছে ঘ্রাণ

তোমাদের বাড়ি দূরে

ভরা মাঠ কুয়াশাম্লান


ভাঙা ব্রিজ, কালভার্টে

দুপুরের রৌদ্র পড়ে

বোরখায় ঢাকা তুমি

এস্রাজে বৃষ্টি ঝরে


তুমি কি সলোমনের

সুগন্ধি প্রেমের সে গীত

অথবা প্রাচীন দেশে

ওক গাছে তুষারে শীত?

 

পুরুষের প্রতি নারীর কথা


আমাকে দেখতে এসো

ভালো যে লাগে না আর

বাটিতে দুধের সরে

পড়েছে রোদ কবেকার


দূরে কোন হাওয়ার ব্রত

এখানে বৃষ্টি ঝরায়

বাতাবি লেবুর ফুলে

সুরভি খোঁপা পরায়


পুকুরে কৃষ্ণচূড়ার

কী গভীর ছায়া পড়ে

হাওয়াতে পাতা কাঁপে

সমস্ত জীবন ধরে

 

নারীর প্রতি পুরুষের কথা


তুমি কি মেয়ে ভালো, হাওয়া—!

চোখের দূর থেকে ভোরে

কে যেন শুরে নেয় স্মৃতি

সকালে মার মতো করে—


এখানে অসুখের দিন—!

ভেড়ারা ধুন্দুলমাঠে

হারানো তাকিয়ায় শুয়ে

কী যেন ভেবে দিন কাটে


একাকী দুপুরের রোদে,

বাতাসে ভাসে কার ঘ্রাণ

স মিলে ব্লেড ঘুরে ঘুরে

ক্লান্ত থামে সুনসান—


তুমি কি মেয়ে ভালো, হাওয়া—!

মেদুর ডাহুকীর চোখ

ফসল নুয়ে পড়া সুরে

বিবাহ, আমাদের হোক—


\


* ‘সলোমনের পরমগীত’-এর অনুপ্রেরণায়




জান্নাত


তুমি যাবে যেইদিকে

পেছনে হাঁসের দল

বাড়ির পড়শি হয়ে 

জলপাই জঙ্গল—


তোমার ভেড়ারা বাঁধা

গুল্মের কাঁটাঝোপে 

দেখা হয়েছিল চোখ

দূর্গার মণ্ডপে—


এখানে ছড়িয়ে আছে

শাদা জলপাই ফুল

আমি হারিয়েছি মথ

তুমি কাগনার দুল—


আমাদের হতো কথা 

পরিচয় একই গ্রামে

হলদির বন ছেয়ে

ফোটো জান্নাত নামে





জেরুজালেমের পুত্রগণ



তারপর আমি বললাম, হে সলোমন তোমার সমস্ত পপির খেতে ফুলের বন্যা নেমে আসুক যেমন অ্যাম্ফিথিয়েটারে গমগম করে অভিনেত্রীর স্বর প্রক্ষেপণের আওয়াজ—


অনন্তর তিনি জেরুজালেমের প্রান্তরে রেখে এলেন ইঞ্জিল এবং প্রতিটা পৃষ্ঠার থেকে জন্ম নিল পপির বন—


মর্মর শব্দের পাশে এক্সোডাস পেরিয়ে যাচ্ছে জেরুজালেমের পুত্রগAs




অনন্ত কাশ্মীর


তোমার কথা শুনেছে এক কবি

কেবল কল্পনাতেই থরথর

বরফ পড়া প্রাচীন উপত্যকা

জোসনা এসে বাজাতো সন্তুরও—


এখন তোমার চিনার বনে পাখি

হারিয়ে যায় আম্মাকে ডাক দিয়ে

রক্তকেকায় ময়ূর সহজিয়া

ঘুমিয়ে পড়ে অজস্র ইন্দ্রিয়ে—


এখন আমি কাঁদতে পারি হুহু

ফিলিস্তিনও ফুটছে লেবুর ডালে

শাদা ঘ্রাণের প্রসঙ্গতা যেন

ফেনোচ্ছলে উড়ছে কত সালে!


আমার সমাজ ফ্যাসিবাদের ভূমি

কেউ ভালো নাই পাহাড়-সমতলও

ইয়েমেনের রুগ্ন শিশু দেখেও

ক্যামনে তুমি ভাতের কাড়া তোলো


আকাশ ভরা ফসফরাসের বন

অপরাহ্ণে অন্ধ আফিম তীর

আমার মাকেও ডাকতে গিয়ে আমি

ডেকেছি বোন, অনন্ত কাশ্মীর—












একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন