শেষ ইচ্ছে, শেষ সাক্ষ্য
নাজিম হিকমাত
কমরেড, যদি আমি দিনের আলো দেখে না যেতে পারি
—অর্থাৎ স্বাধীনতা লাভের আগেই যদি আমার মৃত্যু হয়—
আমাকে নিয়ে যাবেন
আর কবর দেবেন আনাতোলিয়ার গ্রাম্য গোরস্থানে।
শ্রমিক ওসমান যাকে হাসান বেগের আদেশে গুলিতে হত্যা করা হয়েছিলো
আমার কবরের একপাশে তাকে শুইয়ে দিতে পারেন, এবং অন্যপাশে
শহীদ আয়েশাকে, যিনি রাইয়ের ক্ষেতে সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন
এবং সেখানেই মারা গিয়েছিলেন চল্লিশ দিনের মাথায়।
ট্রাক্টর আর সঙ্গীত গোরস্থানের পাশ দিয়ে বয়ে যেতে পারে—
ভোরের আলোয়, নতুন লোক, জ্বলন্ত গ্যাসোলিনের ঘ্রাণ,
একই রকম মাঠ, খাল ভরা পানি,
থাকবে না খরা আর পুলিশের ভয়।
অবশ্যই, আমরা শুনবো না ওই গানগুলো:
মৃতরা লম্বা শুয়ে থাকে মাটির নিচে
এবং পচতে থাকে যেমন বৃক্ষ শাখা পচে কালো হয়ে যায়
মাটির নিচে তারা শুয়ে থাকে বধির, বোবা, ও অন্ধ হয়ে।
কিন্তু, আমি ওই গানগুলো গাইতে চাই
সেসব লেখার আগেই,
আমি জ্বলন্ত গ্যাসোলিনের ঘ্রাণ পাই
ট্রাক্টরগুলো মাটিতে নকশা কাটতে শুরু করবার আগেই।
আর আমার প্রতিবেশিরা,
শ্রমিক ওসমান, শহীদ আয়েশা,
বেঁচে থাকতে যাদের অনেক সাধ ছিলো,
হয়তো এসবের কিছুই পাবে না টের।
কমরেড, যদি আমি সেই কাঙ্ক্ষিত দিবসের আগেই মরে যাই, বলতে চাইছি
—এবং কেন যেন মনে হচ্ছে হবেও তাই—
আমায় কবর দেবেন আনাতোলিয়ার এক গ্রাম্য কবরস্থানে,
আর যদি খুব কষ্ট না হয়
শীয়রে রোপন করে দেবেন সাধারণ কোন বৃক্ষ