অপ্রকাশিত সুফী কবিতা
১.
বানালে এতো ক্ষুদ্র করে,
এই সময়ের, স্থানের
এক নিবিড় সংগীত....
আল্লাহ, আমাদেরতো
দেখাও যায় না!
অনু পরমাণুর চেয়েও ক্ষুদ্র...
ক্ষুদ্রতম অথবা
যেন নেই আমরা!
অথচ এই দিল ভরা মহাকাশ!
বিশাল আর বড়
হবার কি পরীক্ষা
তোমার সাথে মিলবো বলে!
আল্লাহ... আমাকে ক্ষুদ্রতর...
অদৃশ্য বানালে...
অথচ শ্রেষ্ঠ করে?
দূর আকাশে জিব্রাইল
সবুজ আলো জ্বেলে
চলে গেলো!
এমন প্রেম আর কে দেবে আমায়?
এমন ভালোবাসায় উঠবে কেঁপে
একটি জলের টুকরো
অথবা গ্রহান্তরের সমুদ্রতল!
মনে পড়ে বারান্দায়
দাঁড়িয়ে আমি চা হাতে
তোমাদের কিছু বলছিলাম!
আমি ছাড়া আর
কেউ শোনেনি.....
আমাকে চলে যাওয়ার আগে
বলতে হলো...
কিছু রাস্তা বাঁক নিলো
নবীজির অপেক্ষায়...
অন্য রাস্তাগুলো তেমনি
গাছের ডাল হয়ে দুললো
জিব্রাইলের ডানার ঝাপটায়।
ভালো থেকো
চিঠি লিখো...
ঝরে যাওয়া পাতাগুলোর
মুখে।
২.
এখানে শব্দের শেষ।
নিরুদ্দেশ কিছু আকাশের বাড়ি
তোমাকে পেয়েছিল একা!
এমন করে কে গাইলো
অন্যের গলায় ?
দাবার একটি বোর্ড পড়ে থাকে...
রাজা ঘুমায় সাদা ও কালোয়
মহা বিশ্বের স্বর্গ তক্তিতে!
খুঁজে পাও নিজেকে ,
যে কথা বলে সেই সত্য।
মানুষ সত্য বলে আর
কোনো কিছুই মিথ্যে হতে পারে না।
যা ভাবো তাই সত্য হয়ে যায়।
যা বলো তাই সত্য হয়ে যায়
কারণ মানুষ সত্য।
আল্লাহর বিচারে
মানুষতো সত্যই!
তবু কেন মিথ্যে বলো ?
কেন বোঝোনা এখানে
কাঁচের গাড়িগুলো এসে থামে!
ক্ষুধার্থ ভিক্ষুকদের
রুটি দেয় সেই গাড়ি...
দাঁড়ানো একটি লোক
হাতে তার মশাল ও রুটি।
বহু রাতে ভিক্ষুকরা আসে
কেউ ছদ্দবেশে , কেউ একা,
কেউ নীরবে।
আর কেউ আসে না ,
আমি তাদের নাম জানি
আর জানে তিনি।
সেজদা দাও...
নক্ষত্রের জায়নামাজে।
বহুকাল ধরে সেজদা দাও!
ভুলে যাও...
যেন শুধু সেজদা ছাড়া
তুমি আর কিছু নয়!
৩.
রূহ' এর শহর
কত না নিঃশব্দের!
আমাকে বলেছিলেন
একটি নদীর পাশে
কেউ এসে দাঁড়াবে,
আর সময়গুলো
ঘুরতে থাকবে
চক্রমান দরবেশের সাথে।
মহাবিশ্ব এক হবে...
আল্লাহর মহিমায় উঠলো যিকর!
আলো আর বাতাসের সে কি উচ্ছাস ;
সেকি অপরিসীম আনন্দ!
যদি তোমরা একটু বুঝতে!
যেন হিমালয় এসে দাঁড়ালো দরজায়...
এই সকালটা মনে রেখো
আতরের গন্ধে হারানো!
কিছু দিনলিপি...
আর বিষন্ন তার ইতিহাস
থেকে উঠে আশা নর -নারী।
আবার কোনো একদিন
জলযোগের টেবিলে
পড়ে থাকবে একটি চিরকুট।
মহানবীর আলোয় অন্ধ
হয়ে যাওয়া মানুষ আমি,
দেখি সকল সৃষ্টির চেয়ে বেশি।
অথচ আমি বলেই কেউ নেই....
কেউ ছিলোনা!
যা ছিল তোমাদের
তুমিত্বের একটি অভিলাষ;
তোমাদের তুমিত্বের একটি
আমিত্বের চাহিদা।
আর স্বপ্ণে পাওয়া
কিছু রুবি জ্বলছে আকাশের তারায়...
যা আল্লাহর প্রতীক্ষায় নীল হয়েছে!
আর তিনি এলেন হঠাৎ!
আর ছোট একটি বাক্স
তাতে ভরা সবুজ কিছু রুবি...
দিলেন আমায়।
আমার আমির গান
শিশুরা নিয়ে গেছে
গ্রহান্তরের কোনো দোকানে।
সাঁই বাবার এই উপহারে
দিনটি হলো শুরু!
নামাজ পড়
দীর্ঘ সেজদায় ...
সেদিন কি হবে?
— সজল আহমেদ
সেদিন কী হবে মাবুদ?
সেদিন কী হবে?
আমার সেই দিনটা কেমন হবে, যেইদিন আমি আর আল্লা সামনাসামনি দেখা করবো? আমি জানিনা!
হাশরের ময়দান। খোদা সূর্যটা রাখলেন আমার মাথার একহাত ওপরে। আমার মাথা টগবগ করে ফুটছে, ঘিলুগুলো রান্না হচ্ছে। আমি ক্ষুধার্ত, ক্লান্ত, তৃষ্ণার্ত। ফুটন্ত ঘিলু আমার মুখমণ্ডলে পরতে থাকলো।
খোদা একেরপর এক পাপী কবিদের ডাকছেন আর হিসেব শেষে কিছু ফেরেশতা তাদের শার্টের কলার ধরে জাহান্নামে নিক্ষেপ করছেন।
আমার সিরিয়াল নয়কোটি বিরানব্বুই! একটু সামনে যেতে পারলে মন্দ হয়না ভেবে, এক ফেরেশতা কে ডেকে বল্লাম সবার সামনে যাবো। কত চাও? ইনি নিমরাজি।
হাতে কিছু গুঁজে দেয়ার চেষ্টা করলে তিনি জানান, ইয়া নাফসির আমলে কর্মচারীরা খুব সৎ আছে তাঁরা শেখ হাসিনার মন্ত্রীদের মতো কথায় কথায় অত পয়সা চাননা।
আমি বেকুব হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম, বেশ কিছুকাল পর পেটে তীব্র ক্ষুধা অনুভাব করলাম।
আমার মাথার ওপর সূর্য, আমার ঘিলু রান্না হচ্ছে। আমার মুখমণ্ডলে ফুটন্ত ঘিলু ফ্রাই।
আমি ক্ষুধার্ত! আমি এক হাতে নিজের ঘিলু নিয়ে খাওয়া শুরু করলাম। বাহ্ বেশ ভালো! অনন্য স্বাদ! পরকালে মানব দেহের সবকিছুর পূনঃজন্ম হয়।
আমি জাহান্নামে পুড়ে ভস্ম হলে খোদা পুনরায় আমাকে আগের রূপ দেবেন। সুতারাং আমার ঘিলুও আবার হবে। ক্ষুধা পেলে তখন আবার খাওয়া যাবে।
আমি এক ফেরেশতা কে ডাক দিয়ে বললাম, খোদাকে বলো তিনি আমার সিরিয়াল সবার শেষে দিলেও আমার কোন দুঃখ নেই, ক্ষুধা নিবেরণের আপাতত মোাটামুটি ভালো একটা মাধ্যম ডিসকভার্ড হয়েছে।
সুফি কবি সুলতান বাহুর কবিতা
[সপ্তদশ শতকে পাঞ্জাবে বিরাজমান ছিলেন শাহ সুলতান বাহু (১৬৩০ – ১৬৯০)। সুফি সাধক, কবি ও লেখক ছিলেন তিনি। তাঁর রচিত পঞ্চাশটির মতো গ্রন্থ পাওয়া যায়। প্রকৃত রচনার সংখ্যা আরও অনেক বেশি। তাঁর রচনাবলির বেশিরভাগ ফারসি ভাষায় রচিত, আবার পাঞ্জাবিতেও লিখেছেন কিছু। ইসলামধর্ম ও ইসলামের মরমিধারা সুফিবাদ বিষয়ক লেখা আছে তাঁর। সুলতান বাহুর কবিতাবলি জনচিত্তে আনন্দ দিয়ে আসছে কাল হতে কালান্তরে। তাঁর কবিতা সুরারোপিত হয়ে কাওয়ালি, কাফি ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকরণে গীত হয়ে আসছে। তাঁর লেখা শের বা যুগল-পংক্তিমালাও বিশিষ্ট ধরনে গীত হয়। তিনি সুফিদের কাদরিয়া ধারায় দীক্ষিত হলেও সারওয়ারি কাদেরি নামে একটি তরিকার প্রচলন করেন। এই ধারায় তাঁর উত্তরাধিকারীরগণ এখনও অধ্যাত্মসাধন করেন। তাঁর সমাধি পাকিস্তানের পাঞ্জাবে অবস্থিত। সেখানে নিয়মিত ওরস শরিফ অনুষ্ঠিত হয়। দূরদূরান্ত হতে ভক্ত-আশেকেরা এসে এতে সমবেত হন আর মানবিক সুফি-মতাদর্শী ধারায় নিজেদের দীক্ষিত করেন। এখানে তাঁর একগুচ্ছ কবিতা প্রকাশিত হলো। – অনুবাদক]
১
প্রত্যেকেই খোঁজে নিখুঁত বিশ্বাস,
খাঁটি ভালোবাসা খোঁজে খুব কম জনেই;
বিশ্বাস চায় তারা, ভালোবাসা নয়,
আমার হৃদয়ে তাই জমে ওঠে রাগ;
দিব্য যে-স্তরে তুমি প্রেমের জোরে পৌঁছে যেতে পার,
বিশ্বাস তার খোঁজও রাখে না।
হে বাহু, ভালোবাসাকে সজীব রেখো,
বিশ্বাসের দোহাই দিয়ে বলি এই কথা।
২
প্রভু আমাকে বুঝিয়ে দিলেন,
‘যখনই তোমার প্রভুর কথা ভুলে থাকো অবহেলায়,
তখনই তাঁকে অস্বীকার করা হয়।’
কথাগুলো খুলে দিল আমার চোখ,
আমার সকল মনোযোগ নিবদ্ধ হলো প্রভুর দিকে।
তারপর আমার আত্মাকে সংরক্ষিত রাখলাম,
এই প্রেমই চর্যা করেছি আমার হৃদয়ে।
এইভাবে আমার আত্মাকে তাঁর কাছে সমর্পণ করে,
মৃত্যুর আগেই মরে গেলাম আমি তাঁর মধ্যে বেঁচে থাকতে।
কেবল তখনই আমি জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারলাম, হে বাহু।
৩
জেগে ওঠো, চাঁদ, ছড়াও কিরণ আকাশে-আকাশে,
নীরব প্রার্থনায় তারকারা স্মরণ করছে তোমাকে,
তাদের হৃদয় সংবিৎ হারিয়েছে প্রত্যাশায়।
ভিখারির মতো আমরা দুনিয়ার অলি-গলিতে ঘুরে বেড়াই,
অথচ নিজদেশে আমরা মণি-মাণিক্যের সওদাগর।
হায়, কাউকে যেন আপন দেশ ছাড়তে না হয়,
বিদেশ-বিভুঁইয়ে কেউ তো খড়কুটোর সমানও নয়।
এই দুনিয়া থেকে আমাদের তাড়াতে
হাততালি দেবার দরকার নাই,
হে বাহু, আমরা আমাদের সেই-কবে-হারানো
ঘরে ফিরে যেতে এরই মধ্যে তৈরি হয়ে গেছি।
৪
সাগরের চেয়েও হৃদয় অনেক গভীর,
কেই-বা এর রহস্য মাপতে পারে?
এর উপর দিয়ে বয়ে যায় ঝড়-ঝঞ্ঝা,
যখন সব জলযান পাল তুলে যায় ভেসে,
নাবিকেরা দাঁড় বায়।
হৃদয়ের মধ্যে আছে চৌদ্দটা মোকাম,
ক্যানভাসের তাঁবুর মতন ছড়ানো।
কেবল যারা জানে হৃদয়ের এইসব ভেদরহস্য,
তারাই জানতে পারে স্রষ্টাকে, ওহে বাহু।
৫
আমার ভিতরে পাঁচটি বিশাল দালান আছে,
পাঁচটিই উজ্জ্বলতায় জ্বলে,
আরেকটি প্রদীপ দিয়ে কী প্রয়োজন আমার?
আমার তো আর হিসাব দেওয়ার কোনোই দরকার নাই
পঞ্চপ্রভু আর খাজনাদারের কাছে,
যারা ভিতরপথের দিকে বাধা হয়ে রয়।
পাঞ্জেগানা নামাজের ইমাম ডাকে বিশ্বাসীদের,
ভিতরেই যে মসজিদ আছে পাঁচখানা সেইখানে জাগে ডাক,
আরেকটা মসজিদ দিয়ে আমি করবটা কী?
প্রভু যদি কল্লাটি চান তোমার,
একটুও দ্বিধা করো না, হে বাহু,
তক্ষুণি নিবেদন করে দিও।
৬
আমার সারা শরীর যদি চোখ আর চোখে ভরা থাকত,
আমি আমার প্রভুর দিকে অপলকে চেয়ে রইতাম
ক্লান্তিবিহীনভাবে।
আহা! আমার শরীরের সবকটা ছিদ্র যদি লাখ-লাখ চোখ হয়ে যেত,
তাহলে কোনো চোখে যদি পাপড়ি পড়ত তো অন্যটি যেত মেলে।
কিন্তু তখনও তাকে দেখবার তৃষ্ণা আমার রয়ে যেত অতৃপ্তই,
আমি আর কী তবে করতে পারি?
আমার কাছে, হে বাহু, প্রভুকে একপলক দেখাটাই
লক্ষ লক্ষবার হজ করবার চেয়ে উত্তম।
৭
আমার গুরু আমার হৃদয়ে আল্লাহর নামের জুঁইফুল বুনে দিয়েছেন। সৃষ্টির সত্যতা অস্বীকার আর একমাত্র বাস্তবতা খোদাকে আলিঙ্গন — এই দুইটি বিষয়ই বীজটিকে পরিচর্যা করেছে।
রহস্যের কুঁড়ি যখন উন্মীলিত হলো দিব্যজ্ঞানে, আমার সমস্ত সত্তা খোদার সৌরভে ভরে গেল।
সম্যক সেই গুরু যিনি আমার হৃদয়ে জুঁই বুনেছেন তিনি অনন্তকাল প্রশংসিত থাকুন, হে বাহু।
অজস্রবার জিকির করেছ তুমি আল্লাহর নাম, মুখস্ত করেছ কোরান, কিন্তু তাতে রহস্যের পর্দা উন্মোচিত হয় নাই।
বরং তোমার বিদ্যা আর পাণ্ডিত্য আরও শাণিত করেছে পার্থিব বিষয়াদির লোভ; সংখ্যাহীন পুস্তকপাঠ তোমার পাশব অহমকে বিনাশ করতে পারে নাই।
আসলে কেবল সাধু-সন্তরাই পারে ভিতর ঘরের ওই চোরটিকে নিপাত করতে — যে কিনা বসতঘরটিরই বিনাশ ঘটায়।
যখন একমাত্র প্রভু আমার কাছে নিজেকে প্রকাশ করলেন, তাঁর মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেললাম আমি। এখন আর নৈকট্যও নাই, মিলনও নাই। এখন আর পরিভ্রমণের কিছু নাই, নাই কোনো গন্তব্য। প্রেমালিঙ্গনে আমার শরীর ও আত্মা এমনকি স্থান-কালের সকল সীমানা আমার চেতনা হতে ঝরে গেছে। আমার বিচ্ছিন্ন সত্তা এখন পূর্ণতায় সাথে একীভূত হয়ে গেছে। হে বাহু, এর মাঝেই তওহিদের রহস্য রয়েছে, সেটিই আল্লাহ।
যখন আমি আল্লাহর একত্ব অনুভব করলাম, তাঁর প্রেমের শিখা উঠল জ্বলে আমাকে পথ দেখানোর জন্য। তীব্র তাপ নিয়ে জ্বলে সেটা আমার হৃদয়ে, আমার সকল পথে তাঁর রহস্য প্রকাশ করতে করতে। প্রেমের আগুন জ্বলে আমার মাঝে, ধোঁয়া নাই তার, প্রেমাস্পদের জন্য আমার ব্যাকুলতাই তার জ্বালানি। ভালোবাসার জনকে আমি নিকটে পেলাম। আমার প্রেমই তাঁর মুখোমুখি করিয়ে দিয়েছে।
সৃষ্টির সময়ে আল্লাহ যখন তাঁর থেকে আমাকে আলাদা করেছিলেন, তখন বলেছিলেন তিনি, ‘আমি কি তোমার প্রভু নই?’ চিৎকার করে জবাব দিয়েছিল আমার আত্মা, ‘নিশ্চয়ই তুমি তা-ই।’ তখন থেকেই আমার আত্মা পুষ্পায়িত।
আপন ঘরে ফিরবার তাড়া আমাকে একটুও অবকাশ দেয় নাই পৃথিবীতে শান্ত থাকবার। দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাক। এইটিই আল্লাহর পথ হতে আত্মাকে কেড়ে নেয়। তাঁর প্রেমিকদের দুনিয়া কখনও গ্রহণ করে না। নিপীড়িত হয় তারা, বেদনায় চিৎকার দিয়ে ওঠে।
বিভ্রান্ত
— সজল আহমেদ
লতা বিভ্রম পাতার
ডালে বিস্তৃত সোনার মাদুর
পোকা খাবার লোভে ছোটে
কয়েকশ বিভ্রান্ত বাদুড়।
জানে না বাদুড়
আগালে কয়েকটা ধাপ
সামনেই পাঁতা
আছে মৃত্যুর ট্রাপ!
চাঁদটা হারিয়ে যায়, মেঘের সয়ে অকথ্য যন্ত্রণা
বিভ্রান্ত জোনাক শোনে আঁধারের কুমন্ত্রণা।
জোনাক আর জ্বলেনা
চাঁদ ও ওঠে না
বাদুড় আর ফিরে আসেনা
গাছে বিছানো সোনার মাদুরে
কেউ এসে বসে না।
চলে...
লওহে মাহফুজে এক
একাকী কোরানিক বন্দনা,
বিভ্রান্ত শয়তান ছুটে চলে
পথভ্রষ্ট করার আকাঙ্খা।
ছুটে মসজিদে মসজিদে
ভাঙতে এবাদত
করায়ত্ব হাজীর পাগড়ী করে
লাগায় কলহ; কে শরীয়ত কে মারফত!
কার টুপি লম্বা, গোল। কে রেখেছে দাঁড়ি;
বিভ্রান্ত সবাই, মসজিদে কি আসতে পারবে নারী?
বিভ্রান্ত সকলে বিভ্রান্ত ইমাম,পুরোহিত, রাব্বি, গির্জার যাজক!
চলে কথার বাহাজ, রুষ্ট উপাসক
ফাঁকে ফুরিয়ে যায় সমস্ত ইবাদত!
কে শ্রেষ্ঠ?
মুহাম্মদ না যিশু?
কে জ্ঞানী?
ওসমান নাকি বিশু?
কার গ্রন্থ জগতের এলমের দ্বার...?
কাফের নাকি মুমিন্স ছিলো সম্রাট আকবর?
কে নাস্তিক? কে আস্তিক? কে কাফের বেঈমান
সংশয়বাদী খুন করো ওর ঘটে নেই ঈমান।
অদৃষ্টের পরিহাস - বিভ্রান্ত ইতিহাস,
আকবরি খচ্চর, অশোকের শিক্ষালয়
ভেঙেছে সুলতান মাহমুদ,
দুনিয়া বানিয়েছে যুদ্ধালয়!
অথচ ছিলো কিনা অশোক
তারই নাই কোন হিসাব
বিভ্রান্ত, বিভ্রান্ত, বিভ্রান্ত সব!
বিভ্রান্ত সত্ত্বা, মৃত্যুর পর কই যাবে আত্মা?
কবরের আজাব হবে নাকি হবে না?
বিভ্রান্ত নাস্তিক, পরপার কি আছে? এই ভাবনা!।