হোসেন রওশান এর কবিতা সংগ্রহ

 

পরকীয়া

১৫।৯।১৭

কোল বালিশ, কোলের থিকা পিঠে দৌড়ায়।

চুলকানি মশুর ডাল, তিতা করলার লগে খায় এলার্জি রোগি। 

শান্তির মায়ে তবু এলাকায় থাকে।

ভাবি,  সামনের বসন্তে গোলাপ কিনবো, কেনা হয় না।

খিঁরকির ফাঁক দিন দিন জানালা হইয়া ওঠে।

কেমনে বাড়াও এমনে তুমি.?  

লোভ সামলায়ে দেখি পাড়াত কাকারে!

সকালের নাস্তার লগে পাড়াত হাসি, ছাগল পালন, ঘরের চৌকাঠে উস্টা খায় পা।

.

রাইতে চুড়ি বাজে, কাঁচের গ্লাসের দুধ, পুইশাক ঝোল, টের পাই শীতের পিঠাতে তুমি মাখা গন্ধ।

তুমি আইসো, তোমার লগে আইসে আমার সুখের সতীন! তুমি তারে তুমি ডাকো কেনো.? ওরে তো বাইঞ্চোদ লাগে!

.

বর্গা চাষী মন, তোমারে বর্গা চাষ করে

ও জমিনে কবর হবে না.?

ভালোবাসা প্রেম,  এইভাবে খেয়ে যাবে

আমার সন্তান আমায় বাপ ডাকবেনা।

.


শোক

আমি আমার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।




যারা অসুখ এনেছিলো

ওরা বলে, ওরা আমাকে ভালোবাসে। 

আমি হাসি, অবাক হই, মাথা নিচু করি।

ওরা আমার সুখের কারণ জানতে চায়।

আমি বলি অন্ধকারের কথা, নিঃসঙ্গতার কথা, ক্ষুধার্ত কুকুরের কথা, হেমন্তের বোকামির কথা, মানুষের বিলুপ্তির কথা... 

ওরা বলে  এসব তো সুখ নয়,অসুখ! 

আমি হাসি, অবাক হই, মাথা আরো বেশী নত করি।

ওরা আমাকে সন্দেহ করে৷ 

ওরা আমার অসুস্থতা নিয়ে ভাবে। এরে ওরে বলাবলি করে। ডাক্তারের সন্ধান চায়।

ওরা আমাকে উপকারী ফলমূল নিয়ে দেখতে আসে। 

আমি খুশি হই। নত হতে হতে মাটির সাথে মিশে যাই।

ওরা ভাবে আমি মরে গেছি। 

ছেড়ে চলে যায়।


দীর্ঘ সুখী অসুখী দাম্পত্য কলহ নিয়ে ওরা ক্লান্ত হয়, ক্লান্ত হতে হতে আমার নাম ধরে ডাকে। 

আমি শুনি, অবাক হই, হাসি।

জোরে জোরে হাসি।

অসুস্থ হয়ে যাই।

ওরে বলে, ওরা আমাকে মিস করে।




আমাদের বাচ্চারা আর স্কুলে যাবেনা?

যে তোমাকে পেয়ে গেছে

সে কি বুঝে দূর?

তোমার অভাব জানে

মা হারা বাছুর। 


পাড়ার গলির মোড়ে

খিস্তির স্বরে

কারা যেন শাসায়েছে

আমি একঘরে। 


তোমাকে বুঝিনি বলে

দেহের আকাল

আমাকে ফিরায়ে দিও

ঘামের রুমাল।


মায়ের শাড়ি পরে 

মামা বাড়ি গেলে

পড়শীর বুকে ঝড়

কী আগুন জ্বলে!


ব্লাউজের পিঠে আঁকা

নয়ন তারায়

সমূহ বিপদ ছিলো

মামাতো পাড়ায়।


আমি কি ছিলাম তবে

মনে পড়া নাম? 

বিষে তো মরিনি আমি

নামে মরিলাম! 


ঘুমের আদলে আসা

ভ্রম সে দুপুরে

হাঁসের বাচ্চা হয়ে

ডুবেছো পুকুরে।


তোমাকে উড়াবো বলে

আমি নিচে ডুবি

আহারের কাদা আমি?

খোঁজো চুপি চুপি?


তোমার বিবাহ দিনে

পাড়া জুড়ে গীত

মেয়েলী বিকেল তবু

হাড়ে ফুটে শীত! 


বন্ধুদের খুনসুটি

বিধবা প্রলাপে

কাপুরুষ হয়েছিলাম

প্রথম গোলাপে।


তোমার বাসরে বাজে

সুমনের গান

নামেতেই মরে গেছে

আমাদের সন্তান।


আমাদের বাচ্চারা আর স্কুলে যাবে না?





চলো বয়স আটকাই


এই প্রগতির উঠোন থেকে চলো আজ চুরি করি বাতাবি লেবুর ঘ্রাণ, কুয়াশার ঘাম আর আমাদের ভুল।

বেঁকে বসা পথ ও পাথরের দুঃখ বুঝতে আমরা খুব বাঁকা হয়ে শোবো, বাঁকা চাঁদের গল্প তুমি নিজেও হতে পারো। 


তুমি কি পানসুপারির খোশ গল্পের মেজাজ থেকে লাফ দিয়ে  শিখতে চাচ্ছো মানুষ আটকানোর কৌশল? শান্ত হও স্নিগ্ধতা। 


আমরা ভুলের বারান্দায় বসে সাপ বেজির শখ্যতা নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবতে বসবো বয়সের সংখ্যা ভুলে গিয়ে। 


এই প্রগতির উঠোন থেকে আজ, এক্ষুনি আমরা দ্বিধা চুরি করবো, চলো...





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন