সৌরভ মাহমুদের কবিতা

 ১

যাওয়ার বিবিধ মুদ্রা রয়েছে মানুষের—

কলমিডোবার পাশে সাঁতারের জীবনি লিখে যায়—

চলে যায়— তবু যায় না যেনো—

শরীরজুড়ে পারফিউম রেখে যায়


ফুরসত তোমাদের বারান্দায়

ফুলগাছে থোকা থোকা ধরে-

আহ্লাদের কেবলই বাহনা খোঁজে

শীতের মায়ায় ঢুকে পরে-





শুভ জন্মদিন শতাব্দীকা ঊর্মি

যাওয়ার যেকোন ঢঙয়ের পাশে-

শীতে শেফলির ঘ্রাণ আসে-

যতক্ষণ না ঝরে পরে কদম

সূর্যও অক্লান্ত লকেটের দোল


যেদিকেই যায়-

আমারই হাওয়ায় শিথান রেখে গান গায়-

'তুই ফেলে এসেছিস কারে?'


ছিল না তো কেউ কোন-


দিন তো শ্যাম রাত্রির দিকেই শাম্পান-

যাওয়ার বাসনা নাই তার-

অনন্ত রাত্রি সেও চায়-


তবু বেফাঁস কলঙ্কের বাজারে-

চাঁদকে, আরেকটু 'আহারে'-

করতে ছিড়ে আসে রাজজোটকের জান-

তুমিও দিনেরই রিফ্লেকশন- এতো ম্লান- 


এতো ম্লান- অঞ্জলির জবা ফুল-

যেভাবে মলিনতার ডাকনাম

আড়াল করে রাখে রাধার প্রতিমায়-


কিঞ্চিত আলাদা ভঙ্গিতে

এতো প্রেম এই মুখে আলো মেখে যায়-

চোখমুখে লাল মেখে যায়-

চোখেমুখে কান্না মেখে যায়-


কি আর এই জিন্দেগি?

যদি বুকজুড়ে ঊর্মি না থেকে যায়।



শতাব্দীকা


সন্ধ্যার পাশে তুমি আলো 

কিছুটা ম্রিয় এই ঘন শ্বাস 

সাঁতারে ছড়িয়ে ধরেছো


আমি দূর থেকে আওয়াজের ঝিরি

খসে পরি হাওয়া পেয়ে গেলে 

আর ডাকি মৌমাছি কাছে 

হুল ফুটলে ভালো লাগে 


যেনো ফুটছে বকুল-

ঘুঙুরের টুকটাক দ্বিধায় 

আর এই প্রার্থনায় আমি বসে

শুয়েও থাকি- হামাগুড়ি খাই- 

আরও হুল- আরও বকুল আমার চাই 


বকুল তুমি ধিরে আসো চামরায়

মাংসের ভাঁজে ভাঁজে লুকানো শীতের কুড়ি 

তুলে আনো ঠোঁটে 


বকুল তুমি ধিরে ডাকো আমারে কাছে 

দেখো- এই গুটি গুটি বল্প্রিন্টের হাত 

যেনো কামিজ হবে তোমার 

শরীর জড়ানোর লোভ সামাল দিয়ে রাখো 


এখন সন্ধ্যা কেবল-

সন্ধ্যার পাশে তুমি আলো 


জংলার ধারে যারা গিয়েছিলো 

তাঁরা ডুব দিয়েছিলো 

তাঁরা শান্তি পেয়েছিলো চামরায় 

আর মাংসে পৌছানোর আগেই ফিরে এসেছিলো 

মাগরিবের উৎকণ্ঠায় 


তুমি এই ডুব ডুব ভাসা ভাসা মাগরিব

তাঁর পাশে আমি অনন্ত আরাফাত 

আছে সাহারা- আরব সাগরের ঐ গভিরে তুমি থাকো- 

আর আমি যাইনি তোমার কাছে- 

তবুও ঐ হাওয়া যখন ছুটে আসে 

আর ধরে রাখা শ্বাসগুলো ছেড়ে- বাস্প মুখে তুলে ধরি-

ঠোটে তুলে ধরি- 


ধরবার এমন কৌশল আমার আছে- 

তাই এই ব্যাথার বালুর ভেতর বসবাস ভালো লাগে- 

ভালো লাগে হুল ফুটলে- 

তোমাদের উঠানে বকুল ঝরলে


আরও বেশী ভালো লাগে বকুল-

ফুল হবার ভান করলে- 

আরও বেশী ভালো লেগে যাবে- 

এই আমি তোমার নাকফুলের ছায়া হয়ে গেলে


সন্ধ্যার পাশে তুমি আলো 

আর তার পাশে আমি ম্রিয়  এক ঘ্রাণের বেতার




ঊর্মি

*


আলো আসে যায়- দেখো

ভেজা মাছের ছানারা তড়পায়-

কোথায় সে সুর খুঁজে পায়? 


তারে কি ডাহুক ডাকে? খুব নিরবে?

সেও কি বাসনা রাখে- খুবে করে-

কোন একদিন- এইসব ফেলে-

রূপালি ঘুড়ির পিঠে হবে সওয়ার-


যাবে যতদূর- যেতে ভালো লাগে-

তারপর ফুরসত নেবে জিরোবার-

যেরূপে ক্ষণিক থেমে- ওই বেওয়ারিশ পাখির বাহার-

আমাদের ভোর ডেকে এনে- উড়ে চলে যায়


ঘন ছায়ার খোয়ার ভেঙে-

তোমারও যেতে খুব সাধ হয়-

মাখতে ইচ্ছে করে গায়ে প্রজাপতি রং-

কখনো ডাকতে ইচ্ছে করে প্রেমিকেরে এই বলে-

বাক বাকুম- বাক বাকুম-


এই গৃহ দমে মরে যায়-

শ্বাসের আড়ালে শ্বাসেরা হারায়-

আর তার জানালার পাশে আলো আসে যায়-

মসৃণ জলে ভেজা মাছেরা তড়পায়-


সাথীদের সারগামে তবু চুপ মেরে বসে-

তোমার জীবন কোন জলের ধারে এ কেমন জীবন খুঁজে পায়!

সেখানে রোদ পড়ে- জলেরা ঝিলিক দিয়ে জলেই মিলায়-

আগন্তক প্রাণের ব্যাথায়- মোচড়ে জোয়ার বাড়ায়। 


আকাশের দিকে এই দেখা ভালো লাগে-সমতলে-

যেনো বৃক্ষের চূড়া থেকে এ প্রাণ লাফায়-

আকাশ ছোঁবার যাতনায়-

মেঘ হয়ে কাঁদে- বৃৃষ্টি ঝরায়- 


মেঘের সওয়রি সে-

গান নিয়ে আসে- প্রেমে ডুবে যায়-

ব্যথা ভালোবেসে যেনো মরে যায়-

ফের বেঁচে যায়- তাকায়-


আলো আসে যায়-

তার বুকের ভেতরে পরাণের মাছের ছানারা তড়পায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন