তিপ্পান্ন ~
আমাদের বয়স হইছে মোটামুটি তিপ্পান্ন
আর কিছুদিন পরে আমরা কাজকাম কিছু করতে পারবো না
আমাদের ছেলেমেয়েরা আমাদেরকে ঠিকমতো
খাইতে দিবে না
ভালো রুমে ঘুমাইতে দিবে না
তাদের ছেলেমেয়েদের কাজের লোক বানাবে আমাদের
মতামতের দুই পয়সা পাত্তা দিবে না বলবে
আমাদের এই আব্বা-আম্মা
জন্মদান করছে আমাদের
এই জন্যে কত ঋণ
কত ভালোবাসি তাই মাদার্স ডে ফাদার্স ডে
তাই টিং টং ফাক!
কিন্তু আমাদের মরা যাওয়ার আগপর্যন্ত
এবং পারলে মরা গেলাম গা তার পরপর্যন্ত
অভিনয় কইরা যাইতে হবে যে
আমরা আমাদের ছেলে ও মেয়ে ও
তাদের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে স্রেফ হুগনা কলাগাছের ন্যায়
শেষ জীবন যাপন করতে পাইরা
কত খুশি ছিলাম যে খুশির ঠেলায় মইরা ভূত…
কারণ ওই অভিনয় না করলে বাচ্চারা আমাদের
খাওয়া কমায় দিবে
হাতখরচ দিবে না দেড় সপ্তাহ
টেলিভিশন দেখতে দিবে না
অসুস্থ হইলে ডাক্তার দেখাবে না
ডেইলি দুই বারের জায়গায় পাঁচ বার
ধমকাবে আমাদের, বলবে,
সারাক্ষণ ফোন লইয়া বইসা থাকেন কেন আব্বা
কাজ-কাম নাই আপনের বুড়া হইছেন না, যান
নামাজ-কালাম পড়েন গা গিয়া, যান
ভিডিও না দেইখা কিছুক্ষণ
বাচ্চাদের হাগা মুইছা দেন!
তাই এই তিপ্পান্ন বয়সে এসে
সামনের ধেয়ে আসা বার্ধক্য পর্যায়
দেখে আমি ভয় পাচ্ছি ও আম্মা,
এ কোন জগতে আইসা কী করলাম
কিছুই করলাম না খালি মৃত্যুর অপেক্ষা
জানি আপনি আর আমি করি
একই টাইমে ভিন্ন রূপে
সময়ের সামনে যারা ভবিষ্যৎ বৃদ্ধ ও বৃদ্ধারা
আমি তাদের এক নগণ্য ছোটভাই হিসাবে
বলতে চাই
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি
বয়স্ক মানুষের প্রতি পরিবার ও সমাজের অবহেলা
বিষয়ে কিছু একটা করেন,
যাতে আমরা না মরি কোনো
বার্ধক্যজনিত কোনো পারিবারিক
অকালহত্যায়।
— ব্রাত্য #রাইসু ৬/৭/২০২০