রুচি
❑
সাত বছর বয়সে একটা সাইক্লোন খেয়ে আমি বিখ্যাত হয়েছিলাম।
কয়েক বছরের মধ্যে দুর্যোগ খাওয়ার বিষয়ে আমার সুনাম সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে।
কোথাও কোনো বন্যা, টর্নেডো, দাবদাহ বা
দুর্ভিক্ষ হলে আমার ডাক পড়ত। আমি খেয়ে আসতাম।
.
এরপর পৃথিবীতে একদিন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলো। তাইপে বা কুয়েত থেকে এটা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ইওরোপের সম্মান রাখার জন্য শেষমুহূর্তে আংকারা থেকে শুরু হয়।
এবার আর কেউ আমাকে ডাকে না...।
.
তবু কী মনে করে যেন সুলতানী আমলের এক সড়কে বসে আমি বিশ্বযুদ্ধটা খেয়ে ফেলি।
আর
তুমুল
আক্রোশের মুখোমুখি হই।
.
উত্তর সন্দেহ করল পুবের স্বার্থ
রক্ষায় আমি এই কাজ করেছি।
পুব ভাবল পশ্চিমের। আর পশ্চিম ভাবল দক্ষিণের।
দক্ষিণ কিছু ভাবেনি।
কেননা এ বিষয়ে তাদের
না ভাবার জন্য আগে থেকে প্রস্তাব পাশ করা ছিলো। তাদের ঢের মতানৈক্যের মধ্যেও তবু আমাকে হত্যা করার বিষয়ে তারা সবাই
একমত হলো।
প্রথমে তারা আমাকে বিদ্যুতের শক দিয়ে মারার
কথা ভেবেছিলো।
আমি বিদ্যুৎ খেয়ে ফেলতে পারি ভেবে সেই
চিন্তা থেকে তারা সরে আসে।
আটলান্টিকে ডুবিয়ে মারার পরিকল্পনাও শেষ মুহূর্তে বাদ পড়ে।
.
একবার ফাঁসিতে ঝোলানোর আলোচনাও হয়েছিল।
পরে তারা ভাবে ঐখানে নিলে
আমি মঞ্চসহ ফাঁসি খেয়ে ফেলতে পারি।
তারা আর সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
উদ্বেগ বাড়তে থাকে।
তাদের উদ্বেগ দেখে আমি হাসি।
গরুর দল জানে না,
একটা বিশ্বযুদ্ধ খেয়ে ফেলার পর মানুষের আর খাবার রুচি থাকে না!
.
[কালো কৌতুক, ২০১৭]