ডুঁবসাতার?
গভীর জলের মাছ বলে গালি দাও—আমি ভাসমান এক
সরল পুঁটির জ্বর। ছড়াই শঙ্কা’র মিউকাস। কানকোয়
কেটে ফেলি পূতিগন্ধ-পানির হর। আমার তলে, বহু,
বিরাটাকার মাছ। আমি না চাই তবু,
হিংসা ও হীনতার জের আমায় করে গ্রাস
ঘাই দিয়ে ঘোলা করি সকল মহৎ।
আমার, সাধ্বী নারীর লোভ তাই, তারা’র
চ্যুতি হলে জ্যোতি মাখি গা’য় আর দিনে
তাপের ভয়ে আফসাই, করি ঠান্ডার এবাদত।
আমাকে তরল ডেকে দেখো, আমি ডুব দেবো
কাদায় গা ডলে প্রাণপণ
উপরে পাঠাব বুদবুদ পূত
গভীরের বিরল পাঠে আমি খাঁটি হব—
আমাকে পাবে যথাযথ পুণ্যময়; পাক।
ম্যান্ডেট
.
আমাকে ঘিরে সকাল সন্ধ্যা দাঁড়ায়ে থাকে রাষ্ট্রীয় কুকুর।
আমার যাবতীয় গতি স্থাণু হয়ে আছে তার কাছে।
যৌনতায় আক্রান্ত হলে—নিরুপায় আমি ওর কাছে যাই;
গালে গাল ঘষে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে পাঠগৃহে পাঠাই।
আদবে লেহাজে আলোকিত হয়, আমার আগত ভবিষ্যৎ।
তারপর আমি—যথা নিয়মে কুকুর সাপ্লাইয়ের ম্যান্ডেট লাভ করি।
আশহাদুআল্লাইলাহাইল্লাল্লাহ
.
খোদা, সম্মিলিত সেজদা আমি দেবো না
লোক দেখানো নামাজে তোমার বীতরাগ—
এ কথা আমি কী করে বুঝাই—তোমার কঠোর ঘোষণা
তোমাকে নীরবে খোঁজার
আমি ভয় পাই, খোদা, নিজের চেয়েও তোমাকে ছাড়ার
তাই চক্ষু চড়ক রাখি
ভুল করেও দেই না কুর্নিশ, দেবো না কুর্নিশ
এই ভালোবাসা ভুল বুঝে তাবৎ সাজেদ, জানি
আমার শির নিতে কোষ মুক্ত করবে তলোয়ার
শুনো খোদা, তখন তোমাকে
আরো একবার ভালোবেসে তাদের কলবে জুড়ে দিয়ে যাব
তোমার গূঢ় অন্ধকার।।
ঢেউ এনে দেবো না
.
ডাকাতিয়া থেকে ঢেউ এনে দেবো না—সাঁতার ছাড়াও
আরো কিছু শেখো নদীর। রাইরুটি নিয়ে বসার আগে
আগাপাছতোলা ভাবো। ক্ষমতা জানো স্বাদের;
ভদকারও পড়ো দরুদ।
ভেটেরায় ডোবার আগে বউকে ক্রমে ফুঁড়ো—
আঁচলের গন্ধ পাছে ভুলো! তৈল মর্দনে, শোনো,
ঘাড়ের চেয়েও মর্যাদা হাতের।
আমাকে গাল পাড়ো ভালো—
নতুন গর্ভাধান প্রয়োজন আছে।
আর কোনো কাজে জড়াই নাই জীবন
.
পাপে ডুবি থাকি পরম
মাথা তুলে কোনোদিন বাড়াই নাই মুখ
পুণ্যের সঙ্গে কোনোকালে মেলে নাই সাক্ষাৎ
হেনকালে পাড়ি যদি আফসোস তাই—
আর কোনো কাজে জড়াই নাই জীবন।
রুনু
.
অর্ধনিমীলিত দৃষ্টি বুজে যাক অথবা পূর্ণভাবে তাকাক। রুনু এই চায়। আমি আছি মাঝামাঝি। রুনু এক সুতীব্র আলো; অনেক নিষ্পেষণের পরেও ঠিকই এলায়ে পড়েছে আমার উঠানে, আমাকে অন্ধভাবে মাখাতে চেয়ে ওম। বলেছে সে, চলে এসো। টিকিট করে ফেলো কলকাতার। আমি তাকে বলতে পারি নি শুধু, আমার সামর্থ বড়োজোর গলির মোড়, যেখানে পথ হারানোর শংকায়, প্রেমিকাকে যে কেউ ছেড়ে যায় । অথচ কথা ছিলো রুনুর , নিরপেক্ষ যে-কোনো শহরেই রক্ষা করে নেবার প্রিয় সংগোপন । আর খণ্ডণ আমার, এখনো কুঁকড়ে যাই অন্য মুঠিতে দেখে পরিচিত হাত। সারল্য থেকে দূরে যেতে পারি না। জানি, রুনু, দুঃস্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে অন্য কারো সাথে ধীরে নিবিষ্ট হয়ে যাবার। আমিও একদিন , কপর্দকশূণ্য পকেটে স্বপ্ন দেখতে চাই ভারত কিনে ফেলার টাকার।
শ্রীনিধি জংশন পর
.
শ্রীনিধি জংশন পর, তোমাকে মনে করা যাক। শুকানো ঘামের গুঁড়ো আর শাদা ছোপ, শার্টে ধিকিধিকি উড়ে। বাতাস ক্লান্ত নয়, আর্দ্র নয় তাই মনে করা যাক তোমাকে। রক্ত পাম্প করা হৃদয় এখনই নয়—অর্গল খুলছি না। বরং চলে যাই কল্পনার কাশবনে ; তোমার পোষা বিড়ালের স্নেহাশীষ লোমে মুখ গুঁজে।
আড়ালে, আমি যাচ্ছি রাজধানী, কৃতজ্ঞমুখ ফিরিয়ে দিতে আমার পূর্বপুরুষেরে। এবং, স্থানিক চাহিদা পৌঁছে দিতে প্রয়োজনানুসারে। তাই, ট্রেজারি থেকে আইনত, আমাকেও হাতাতে হবে দানা। আমার সন্দিগ্ধ ফুসফুস হতে এ খবর প্রচার হওয়া মানা, তোমার কাছে। তাই তোমাকে বলছি না।
বরং, সংকল্প করি, বিকেলের ফাঁকে নিজের আড়ালে তোমাকে দেখাবো হাসি; হৃদয়ের স্ফুলিঙ্গ চেপে প্রিয় ভালোবাসাবাসি। কপালে ফিরে আসা ঘাম, তোমার চোখে আমার সন্দেহাতীত মুখশ্রী। অধিকম্প থেকে সরে আসা স্বর তুমি শুনবে না। মৌনতায়, বিহ্বল সময়ে এরকমই স্থায়ী তুমি। তোমাকে জানতে দেবো না তাই, হৃদয়ের চেয়ে পাকস্থলী এবং বীচি জরুরি।
সন্ধ্যা
.
সূর্য দেবে গেলে আমরা বেরুবো। আমি তুমি; এবং আমরা। সংঘব্যর্থ লোকেদের, যারা খণ্ডকালীন প্রেম ভুলে উদ্বেলিত হতে চায়, তাদের জড়ো করবো নগরীর উপকণ্ঠে; হিলট্র্যাকের নিচে অন্ধকার বার’এ। তাদের মাঝে জাগাতে বোধ, নিরুৎকণ্ঠায় ঘোষিবো, হারানো প্রেমিকার শোক দীর্ঘ করো। আর এ লক্ষ্যে, তাদের বিবিধ গল্প শোনাবো।
যারা আঁকতে চেয়েছিলো তাদের শোনাবো উরসুলার গল্প। যারা লিখতে চেয়েছে তাদের বিয়াত্রিচ। আর মুদ্রা ভুল করা প্রেমিকা যাদের, তাদের শোনাবো ডানকানের গল্প। আমরা অপেক্ষা করবো নীরবতার। আমরা অপেক্ষা করবো নিবিড়তার। ক্ষীণ আলো নিয়ে উড়ে যাবার পরেও দেখবো জোনাক।
আমরা অপেক্ষা করবো মাহেন্দ্রক্ষণের। লাস্যময়ীসহ প্রাডো উড়ে গেলে বাংলোর দিকে, ফ্লাড আলোয় ধাঁধিয়ে যাওয়া মুখ দেখবো। আর্দ্র চোখ দৃশ্যত হলেই কেবল, আমরা নড়েচড়ে বসবো। সুউচ্চকিত কণ্ঠে লাফিয়ে উঠবো। উল্লাসে ফেটে পড়বো; বলবো, চিয়ার্স! জিতেছে প্রেম!