স্বাধীনতার সুখ
বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই,
“কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই,
আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে
তুমি কত কষ্ট পাও রোধ, বৃষ্টির, ঝড়ে।”
বাবুই হাসিয়া কহে, “সন্দেহ কি তাই?
কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়।
পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা,
নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর, খাসা।”
বিনয়
বিজ্ঞ দার্শনিক এক আইল নগরে,
ছুটিল নগরবাসী জ্ঞান-লাভ তরে;
সুন্দর-গম্ভীর-মূর্তি, শান্ত-দরশন,
হেরি সবে ভক্তি ভরে বন্দিল চরণ।
সবে কহে, “শুনি, তুমি জ্ঞানী অতিশয়,
দু’একটি তত্ত্ব-কথা কহ মহাশয়।”
দার্শনিক বলে, “ভাই, কেন বল জ্ঞানী?
‘কিছু যে জানি না’, আমি এই মাত্র জানি।”
পরোপকার
নদী কভু পান নাহি করে নিজ জল,
তরুগণ নাহি খায় নিজ নিজ ফল,
গাভী কভু নাহি করে নিজ দুগ্ধ পান,
কাষ্ঠ, দগ্ধ হয়ে, করে পরে অন্নদান,
স্বর্ণ করে নিজরূপে অপরে শোভিত,
বংশী করে নিজস্বরে অপরে মোহিত,
শস্য জন্মাইয়া, নাহি খায় জলধরে,
সাধুর ঐশ্বর্য শুধু পরহিত-তরে।