যদি
যদি তুমি মাথা ঠান্ডা রাখতে পারো তখন
যখন সবাই মাথা গরম করে দোষারোপ করছে তোমাকেই,
যদি তুমি নিজের ওপরে আস্থা রাখতে পারো তখন, যখন সবাই তোমার ব্যাপারে সন্দিহান, আবার অন্যদের সন্দেহ করার জায়গাটাও দাও;
যদি তুমি অপেক্ষা করতে পারো, আর অপেক্ষা করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে না পড়ো;
যদি তোমাকে নিয়ে যখন মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে, তখন নিজে মিথ্যা কথা না বলো,
যখন তোমাকে ঘৃণা করা হচ্ছে, তখনো তুমি ঘৃণার পথ বেছে না নাও;
অবশ্য তখনো তোমাকে অতিরিক্ত ভালো সাজতে হবে না, খুব জ্ঞানীর মতো কথা বলতে হবে না:
যদি তুমি স্বপ্ন দেখতে পারো, কিন্তু স্বপ্নকে তোমার প্রভু বানিয়ে না ফেলো,
যদি তুমি চিন্তা করতে পারো, কিন্তু চিন্তাকেই তোমার লক্ষ্য বানিয়ে না ফেলো,
যদি তুমি ‘বিজয়’ আর ‘বিপর্যয়’—এই দুইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারো,
আর যদি তুমি এই দুই প্রতারককেই একইভাবে গ্রহণ করতে পারো;
যদি তুমি সহ্য করতে পারো তখন, যখন তোমার বলা সত্য কথাকে বিকৃত করে অসাধু লোকেরা বোকা মানুষদের জন্য ফাঁদ বানায়;
অথবা তুমি যে জিনিসগুলোর জন্য জীবন দিয়ে দিয়েছ, সেগুলোকে যদি তুমি ভেঙে যেতে দেখো, আর যদি তুমি সামনে-পেছনে ঝুঁকে পড়ে ক্ষয়ে যাওয়া হাতিয়ার দিয়ে আবার সেগুলোকে গড়ে তুলতে পারো: যদি তুমি তোমার বিজয়গুলোকে এলোমেলো করে রাখতে পারো
আর সেসব নিয়ে বাজি খেলে সব হারিয়ে আবারও নতুন করে শুরু করতে পারো,
আর হারটা নিয়ে একটা কথাও ব্যয় না করো,
যদি তুমি তোমার হৃৎপিণ্ড, স্নায়ু আর পেশিকে তোমার পালা চলে যাওয়ার অনেক পরেও কাজ করতে বাধ্য করতে পারো, তখনো...
যখন তোমার ভেতরে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই কেবল ইচ্ছাশক্তি ছাড়া, যা বলছে ‘লেগে থাকো’:
যদি তুমি সাধারণ মানুষের সঙ্গে চলার সময়ও তোমার বিনয় ধরে রাখতে পারো
আর রাজাধিরাজের সঙ্গে চলার সময়ও সাদাসিধে ভাবটা হারিয়ে না ফেলো,
যদি শত্রু কিংবা সহৃদয় বন্ধুও তোমাকে আঘাত দিতে না পারে,
যদি সব মানুষ তোমার ওপরে নির্ভর করে, কিন্তু কেউই খুব বেশি নির্ভরশীল হয়ে না পড়ে,
যদি তুমি ক্ষমাহীন একটা মিনিটকে ভরে তুলতে পারো ষাট সেকেন্ডের দৌড়ের সমান মর্যাদায়,
তাহলে
তাহলে এই পৃথিবী তোমার, এই পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব তোমার;
এবং তারও চেয়ে বড় কথা, তুমি হয়ে উঠবে একজন মানুষ, পুত্র আমার।