যুথি আহমেদ এর কিছু কবিতা



 1

কালাতিপাত শুধু অনুপাত হলে

হিসেবটা লাগে বড় গোলমেলে, 

ধুত্তোর! এলোমেলো সবটাই 

বিভেদের পথে হাঁটে ধাঁধা তাই!


আততায়ী ক্ষতে নেই মেরামত

দিন শেষে সন্ধ্যেরই আলামত,

ধরে নিয়ে ছোঁয়া জোড়ে আসে ঝড়

অনুভবে রাত জানে কত জ্বর....


2

হিতে বিপরীত আর উচিৎ অনুচিত, 

গড়ে ওঠা সেই সময়ের ভিত,

অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অনুভবের অনুবাদ 

হৃদয়ের জমিতে ফসলের আবাদ। 

চলুক দিনভর বিরতিহীন উপাসনা 

ক্রমশই বাড়ে তবে প্রাপ্তির বাসনা...…


3

সেই কবে হারিয়েছি স্বেচ্ছার সাধ

যেটুকু আছে তাতে ভৎসনার বিষ

তোকে দেয়া সেই শেষ পাত্রের জলে

আমায় একটু জীবন পাঠিয়ে দিস.....


4

সম্পর্ক 

❤❤ সকল ভালোবাসার আকাঙ্ক্ষার পক্ষ থেকেঃ


আমি বলছিনা আমার থেকে অনুমতি নিয়েই তোমায় কিছু করতে হবে-

আমি বলছি আমাকে শুধু একটু জানাতে, আমি তাতে সম্মানিত বোধ করি।


আমি বলছিনা তুমি আমাকে ছেড়ে আড়ালে অন্য কারো কাছে গিয়ে সুখ খুঁজোনা,

আমি শুধু বলছি যদি যাও, 

তবে তোমার মনে হবেনাতো 

আমাকে তুমি ঠকাচ্ছো বা 

যার কাছে গেলে সে সত্যিই 'তোমাকে' ঠকাবে নাতো!


আমি বলছি না তুমি ফোনে অন্য কারও সাথে কথা বলতে পারবেনা বা চ্যাটিং করতে পারবেনা।

আমি বলছি যার সাথে কথা বলছো তার কাছে তুমি বা সে তোমার কাছে পরিষ্কার তো!


আমি বলছিনা তুমি আমার কাছে সত্য লুকিয়ে যেওনা।

আমি শুধু বলছি আমাকে লুকোনোর যোগ্য কিছু হলে সেটা তোমার পীড়ার কারণ হবেনাতো!


আমি বলছিনা আমাকে ভালোবাসো।

আমি বলছি নিজেকে ওসব থেকে সরাতে না পারলে  আমাকে মুখ ফুঁটে আসলে বলতেই পারবেনা তুমি 

আমায় ভালোবাসো।


কেননা আমি তোমায় নিগুঢ়ভাবে স্বচ্ছভাবে আর আত্মবিশ্বাসের সাথে ভালোবাসি।।




5

সহজ শর্তে তবু মর্ত্যে বাড়ছে শতেক ঋণ

নিজের খোঁজে আবেগ বোঝে সবই অর্থহীন! 

আবার বিবেক আধেক মরে, আধেক বিকায় বোধে

পথ চলাতে হাজার বাঁধা পথকে এসে রোধে....


6

বছর না হয় গেলো যেমন গেলো

প্রতি দিনটা যাক যে এবার ভালো....


হিসেব কিছু থাকলে এলোমেলো 

দিন শেষে তা মিলিয়ে নেয়াই ভালো।


আসছে দিনের সাদর সমাদরে 

শুদ্ধ মনে এগিয়ে যেতে চলো।।


7

হাজারও উপত্যকার ওপারে 

বোবা দৃষ্টিতে চেয়ে থাকা অপলক ভালোবাসা। 

খড়কুটো হলে জলে ভাসা ঠিকানা বিহীন 

নতুবা পুরে যাওয়া খানিক ক্ষীণ ঝলক,

পথে পর হয়ে রয় কত মাইলফলক। 

রোজের খাতায় নিয়মিত পাতায় 

বেহিসেবী করচা 

একদিন খুব ভোরে বিয়োজনেও ক্ষতি নেই

মুক্তিতে শুধু তোমাদের নাম বরাদ্দ  ....


8

কাছাকাছি হলে ঠিক কতটা কাছে...

অনুযায়ী অনুবাদে অনুভূতির মাঝে,

বিচরণে সন্তরণে তবু বাঁধা কি আছে....!


9

ভ্রমে আছি ভ্রমে বাঁচি

ভ্রমে চলছে শ্বাস

ভ্রমে চিত্ত গড়ে নিত্য

দীর্ঘকালের আশ....



10

পোষ্টারে পোষ্টারে আষ্টেপৃষ্টে ঢাকা,

জায়গায় জায়গায় বেরিয়ে আসা,

বিক্ষত ইটের শরীর বহন করে

তার কাঠামোর প্রাচীন পরিচয়। 


বহুকাল ধরে কালের সাক্ষী 

দাঁড়িয়ে রয়েছে ঠায় 

কত বিক্ষোভে কত মিছিলে 

বিস্ফোরণের বোমা করেছে তার ক্ষয়।


আজ পাশ ঘেষে গড়ে ওঠা

নোংরা আস্তাকুঁড়ের স্থায়ী স্তম্ভ। 

কি এক জোড়ালো বিষয়ে 

কোলাহল করে পথকুকুরের দল।


জানালার ধার ঘেঁষে বসে বসে

গভীর মনোযোগে দূর থেকে দেখি,

মনোনয়নে নেতৃদ্বয়ের কারসাজি শেষে

বিজয়ী আর বিজিতের ফলাফল।


অবলীলায় হেঁটে যায় পথিকের সারি,

পুরনো সে দেয়ালের স্পর্শে,

নিশ্চিন্তে কেউ স্থীর সময় কাটায়না,

একাকী বৃদ্ধ দেয়াল গুনে যায় অবহেলা।


শুধু প্রকৃতির ডাক পরে গেলে তবে,

নিম্নচাপের স্বস্তি লাঘবে সবে,

নিবারনের কার্য সম্পাদন শেষে

ভুলে যায় তার পরিচয় বেলা।।



11

জানা বারন

কোন সে কারণ

কোন সে ক্ষততে

বিক্ষত মন

কতোটা ক্ষোভে 

বিক্ষোভ করে

কত রাত গত হয়!


12

বিকশিত আজ সূচনার দল

নব্য মেলিছে সদ্য পাখা,

কাব্য পংক্তি পংকজ বনে 

পঙ্কিল ভেদিয়া বাড়িছে শাখা...


13

হেথা অরণ্য যেথা বনবাস, 

পরিসরে পরিজন নেই কোনো।

পরিনত কোন ভয়ানক পরিনতি,

সেথা নব আত্নীয় সবে যেনো....


14

বহু পথ হেঁটে এসে ক্লান্ত পথিকের বেশে,

আখিপল্লবে অবসাদ চেতনা হারায়।

অজস্র কল্পনাদের অবাধ বিচরনের মাঝে 

আমি একা নির্জনে,

আবছা স্মৃতির কোলাহলে, 

ঝাপসা আয়নায় স্বচ্ছতা আসেনা।

ভেসে যাই কোন অদেখা ভুবনে,

গতিপথ জানা নেই, শুধুই ছুটে চলা।

ক্লান্তিময় নিদ্রাহীন ব্যথিত সময় 

পার হয় অবলিলায়।

তবু পথ ফুরোয়না....

তৃষ্ণার্ত,ক্ষুধাতুর এক অসহায় আমি;

পলাতকা ভোরের গল্প শুনে থমকে দাঁড়াই,

নিজেকে অপরিচিত লাগে।

নিশ্চুপ হাঁটি আবার নিরুদ্দেশের উদ্দেশে!



15

সে বললো......

হয়তোবা অনেক অনেক দিন তুমি কষ্ট পেয়ে কাটিয়েছো,

হয়তো বহু রাত একাকিত্বের যন্ত্রণায় ছটফট করে কেঁদেছো গোপনে,

হয়তো আশাহত মনে হতাশা আপন করে চলেছো দিনের পর দিন,

হয়তো চেয়েছো কোনো পরিবর্তন এসে তোমার জীবন বদলে যাক,

আর আমি তোমার সেই প্রতিক্ষার অবসান ঘটাতে হাতে হাত রেখেছি আজ।

এসো, পেছনে ফেলি সেইসব ভয় পালানো দিনগুলি, আবার দুজনে মিলে গড়ে তুলি সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত....


16

যে কারণে অস্তিত্বে চলে টানা অভিমান 

তা থেকে মুক্তির উপায় জানে মন

তবু এড়াতে হয় প্রতিনিয়ত তারে

নিজের সাথে টানাপোড়েনের ক্ষন।


নিতান্ত অনুযোগে বিপক্ষের কলামে

কলম চালাতে অনিবার্য অনিচ্ছায়

অভিযোগে আনুগত্য যায় কমে

নৃশংস উদ্বেগ সব হিসেবের খাতে জমে।


17

পার পেতে যারা খোঁড়া যুক্তি দেয় 

আসলে ধর্ষক সে মনে মনে।

ওরাই কামুক চিত্র দেখে 

সুরসুরী নেয় গোপনে।

আর কামোত্তেজনার পাপে যখন

বিবেক বুদ্ধি হারায়,

নেশায় মাতাল পিশাচ সুযোগে

নারী দেহ খুঁজে বেড়ায়।

আবার করে ভনিতা?!

সুযোগ পেলেই হামলে পরে 

হোক সে শিশু, বৃদ্ধ অথবা 

কিশোরী কিংবা বনিতা।


18

এক মগ দুধে কভু মাছি যদি পরে যায়

মাছি চিপে নিংড়ে নেয় কৃপণে।

ওদিকে একমুঠো ভাত না জুটলেও

আর্তের সেবায় দান করে ধন যেইজনে-

কি বলি তাহারে

শুধু বলি আহারে---!

নিমিত্তে সচলের ভূমিকা 

আচরণ বিধি আর বিধানে,

সবটাই পুরে থাকা 

চেয়ারে ও সিথানে.....


19

মাঝরাতে তক্ষকের ডাক!

নিশ্বাসের শব্দেও বাজে 

স্পষ্ট ছন্দের উত্থানপতন , 

ঘড়ির কাঁটা আপন গতিতে 

ভয়াবহ আঁধার রোধ করেনা।


প্রাণ ভয়ে নয়, অচেনা আতঙ্ক!

আলগোছে তবু চোখ খুলে যায়, 

আবছা আলোতে সাহসের মিনতি, 

আর তখন স্বস্তির ছায়া আনে

শান্ত শীতল মায়াবী তোমার মুখ।


20

অন্ধকারে হাতরে খোঁজা 

পথের দিশা জানা নাই।

এলোমেলো দমকা হাওয়া,

আগুনের স্ফুলিঙ্গ 

জ্বলে পুড়ে নিঃশেষে ছাই।


বিশ্বাস ভাঙা শব্দ;

বুকের বামপাশটা স্তব্ধ। 

এমন করে তেমন আর নয়,

নিশ্চিত না মানা পরাজয়

দূরত্ব ঠিক পেয়ে যায় আশ্রয়। 


নীড় কোথায় তবে...!

আবাসন এর অবসান, 

প্রহসন অসহ্য ,

জীবনের গতিরোধ,  

প্রতিরোধ প্রস্তুতি প্রস্থান।


21

নিশি ভোর জাগিছে রবি

প্রানের পটে আঁকিয়া ছবি,

প্রভাত পাখি গান যায় ধরি

বাসনা রুধিয়া রাখিতে নাহি পারি....


জাগিয়া উঠিল উথলি কামনা

বহিছে প্রেমে আবেগের ধারা,

বরষা ঝরিবে ঝরঝর বুঝি

কুঞ্জ বীথিকা পাগলপারা।।


22

বহুবারই ভেঙেচুরে মন 

আবারো গড়ে নেয়া জোড়াতালি দিয়ে,

খুব আস্থা জমে থাকা বিশ্বস্ততায়

অশুভ কম্পনে দাপটের ফাটল। 

কোনো সেতুতে বন্ধন পোক্ত হয়না 

তথাকথিত ভালোবাসা বিরল,

শক্তি সঞ্চারে সামর্থ্য নিঃশেষ 

তথাপি বেঁচে থাকা নিরেট নিশ্বাসের দান।

অথচ কথা ছিলো অন্যরকম.....




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন