১
নিজের আলোয় হাঁটে যারা গভীর অন্ধকারে
তারাই প্রথম সূর্য দেখে, মোরগ ডাকা ভোরে।
২
দুটি গরু একত্র হলে মূলত ঘাসের আলাপই করে।
৩
কেয়ামতের মুহূর্তে জন্ম নেয়া শিশু,
চোখ মেলে দেখে, পৃথিবী আর নাই।
৪
খারাপ মানুষদের প্রায় প্রত্যেককে আমি এড়িয়ে চলি। শুধু নিজেকে এড়াতে পারি না।
৫
মাঠে তার যত রক্ত ঝরুক অথবা অশ্রু ঘাম,
ফসলের গায়ে লেখা রইবে না, ওই কৃষকের নাম।
৬
সরলতা মানুষকে অনেক সুবিধা দেয়, তবু সুবিধার কাছে গিয়ে মানুষ একদিন সরলতা হারায়।
৭
পাহাড়, মনে রেখো তারে
নদী—আর না এলে ফিরে,
সে হয়তো পথ তৈরি করছে
নিজের বুকটা ছিঁড়ে!
৮
একই আকাশ—ভিন্ন তবু মানে,
পাখির গানের মধ্যবর্তী স্থানে।
৯
এমন...বৃষ্টির...দিন, গন্তব্যও ডুবে গেলো শেষে,
সমুদ্র হারিয়ে যায় নাবিককে পৌঁছে দিতে এসে!
মৃত্যু বিষয়ক আমার এই চারটা লেখার মধ্যে কোনটা আপনার কাছে বেশি ভালো/বেশি অমর মনে হয়?
.
১
পাতার ওড়ার সাধ, মরার পরে মেটে।
.
২
পাখির গানের বাজার মূল্য নাই, মাংসের আছে।
.
৩
মৃত্যু আপনার, কিন্তু তার শূন্যতাটুকু আমার।
.
৪
পৃথিবীর সব গল্প বিচ্ছেদের নয়,
নদী মরে গেলে দুই তীর এক হয়।
আত্মজীবনী
❑
আমার বয়স একদিন বাড়লে আমার স্মৃতির
বয়স একুশ দিন কমে যায়। আর এটা এমন
চক্রাকারে হয় যে হ্রাসবৃদ্ধির হারটাও
ভালোমতো মেলানো যায় না।
গতকাল আমার যা যা মনে ছিলো
আজ তার অনেক কিছু ভুলে গেছি।
আকাশে যে তারা থাকে এটা আমার মনে
থাকলেও আমি তাদের উজ্জ্বলতা ভুলে গেছি।
আমার বউ আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে
এসেছেন। তার সিরিয়াল পেতে পেতে আমি
প্রধানমন্ত্রীর নাম ভুলে গেছি। ডাক্তার আমাকে
বেশি করে চিনি খেতে বলেছেন।
বাসায় এসে আমি চিনির বদলে
এগারো চামচ লবণ খেয়ে ফেলেছি।
আমার শরীরের বয়স বাড়তে থাকে,
আমার স্মৃতির বয়স কমতে থাকে।
বছর ঘুরতে না ঘুরতে
আমার স্মৃতির বয়স হয় দুই
আর আমার বয়স আটত্রিশ।
আমি আমার বাসার ঠিকানা ভুলে
কোথায় যেন চলে এসেছি,
আমি কোথায় বসে যেন
ভাত খাচ্ছি,
খাওয়া শেষ করার আগেই
আমার স্মৃতি দেড় বছরে নামল,
পানিকে যে পানি নামে ডাকা হয়
আমি তাও ভুলে গেলাম।
এক লোককে বললাম বাম
(দেড় বছর বয়সে মনে হয় আমি
পানিকে বাম বলে ডাকতাম)
লোকটা কী বুঝলো বোঝা গেলো না।
আমি কিছু না বুঝে হাঁটতে শুরু করলাম।
হাঁটতে হাঁটতে নামতে নামতে
হাঁটতে হাঁটতে নামতে নামতে
আমার স্মৃতির বয়স
একদিনে নেমে এলো।
মানুষ এর চেয়ে আর ছোট হতে পারে না।
মানুষ এরপর আর কিছু ভুলতে পারে না।
আমি হাসতে ভুলে গেছি
যাদের দেখে আমি হাসতে শিখেছিলাম
আমি তাদের চেহারা ভুলে গেছি।
আমি ভুলে যাওয়া চেহারাগুলোর কথা ভেবে
কাঁদতে শুরু করলাম
আমি কী এক ভয়ে কাঁদতে থাকলাম।
এটা আমাকে কেউ শিখেয়ে দেয়নি
এটা আমার রক্তের মধ্যে
মিশে ছিলো,
না থাকলে
এই পৃথিবীতে যে আমি কী করতাম!
নতুনঃ
খারাপ মানুষদের প্রায় প্রত্যেককে আমি এড়িয়ে চলি। শুধু নিজেকে এড়াতে পারি না।
২
প্রতিটি থাকার পাশে না থাকা অধিক,
গাছে থাকা ফুলটিরও শূন্য চারদিক।