কবির হোসেন এর প্রতি কবিতা

 'ক্ষুধার্ত মাছের স্বাদ' বই থেকে কয়েকটি প্রতি কবিতা। 




বৃষ্টির একটি ফোঁটা কাঁটাতারে কেটে দ্বি-খণ্ডিত হয়ে জল ও পানি হয়ে যায়।


সেদিন ওজন মেপে দেখলাম— ভেতরে তুমি এখনো রয়ে গেছো। 


ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি আছে বলেই চুড়ির শব্দে এত প্রণয়! 


ওড়ানোর কোনো ঘুড়ি নেই বলে চিলের নিচে নাটাই নিয়ে ঘুরি।


ছায়া ক্রমশ লম্বা হয় বলে— বেঁটে লোকটা রোদে দাঁড়িয়ে থাকে।


দরোজা খুলে কেউ কেউ বলে বাড়িতে কেউ নেই!


স্কুলের মতো জীবনেও ভাঙা জানালা আছে, কেউ কেউ তো পালিয়ে যাচ্ছে টিফিনে!


ধান সোনালি হলো, কৃষক স্বর্ণকার হলো না।


জলপট্টিতে জ্বর সারলো, কপাল সারলো না!


যারা আত্মহত্যা করে, তারা বিস্ময়সূচক চিহ্নকে দাঁড়ি মনে করে।


সমুদ্রের প্রতিটি ঢেউ— চার রানের বাউন্ডারি হয় তীরে।


টিনের চালের একমাত্র ফুটা নিয়ে, বৃষ্টির কয়েকটি ফোঁটা ঝগড়া লেগে গেছে। 


জোরে কাশি দিই না, যদি ভেতর থেকে বের হয়ে যাও!


চিরুনির দাঁত ভেঙে গেলে, উঁকুনেরা উল্লাস করে। 


প্রেমিকাকে দোলনায় দোল দিয়েছিলাম, দোলনা ফিরে এসেছিল—প্রেমিকা আসেনি।


দুধ অল্পতেই বিদ্রোহী হয়ে ওঠে— আগুন নেভাতে পাতিল টপকে আসে।


আঁচলের গিঁট থেকে টাকা বের করতে গিয়ে মা দেখেন সেখানে আমি লুকিয়ে আছি।


চিরুনি অভিযানে দুই-চারটা চুল বা উঁকুন আসে, মাথা আসে না কখনো।


গভীর জলের মাছেরা বৃষ্টির খবর রাখে না। 


মাছ, তোমার দেহে এতো কাঁটা, বিঁধে না?


ব্রিজটি ভেঙে গেছে, একটি পথ আবার দুটি হয়ে গেছে। 


ধাক্কা দিয়ে লাভ নেই, পিঠ ঠেকে আছে দেয়ালে।


যে কচুপাতাটি এক ফোঁটা বৃষ্টিও নিতে চাইতো না, তাকেই দেখলাম নদীতে ভাসছে।


নদীর পাশেই একটি পুকুর— অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে।


ঘরে আমাদের জায়গা সংকট বলে, মা বেলুন দিয়ে রুটির মতো মানচিত্রটা ডলেন।


পৃথিবীতে এক শ্রেণির মানুষ আছে, যারা পৃথিবীতে নেই!


জীবন পানসে লাগছিল বলে লবণ ছিটিয়েছিলাম, ক্ষত যে ছিল ভুলে গিয়েছিলাম। 


পিঠের যেখানে মায়ের ঝাড়ুর দাগ, সেখানে কখনো ময়লা জমেনি!


ডিমে নক করেছিলাম, কুসুম এসে দরোজা খুলে দিলো।


জেলখানার ভেতরেও গাছ হয়, জন্মানোর অপরাধে। 


নৌকা কখনো স্পিড ব্রেকার মাড়িয়ে যায়নি— স্পিড ব্রেকার মাড়িয়ে গেছে নৌকাকে।


কতবার চেয়েছি— তার বুকের পাথরে ভেঙে যাক তারই হাতের চুড়ি। 


বরফের শরীরভর্তি শীতল চোখ, হাল্কা তাপেই কান্না করে দলবেঁধে।


তোমার কাছে নত হইনি, মাথা নামিয়ে হৃদয়ের কথা শুনেছি।


প্রেমিকার ঠোঁটে দারুণ ঘাম, চুমুতে আমার লবণ বেশি হয়ে যায়।


মেয়েটার শরীরভর্তি তিল, লোকজন তাকে কালো বলে।

 


হাজিরা খাতায় দু'বার নাম চলে এসেছে, কোথায় উপস্থিত আছি জানি না! 


খসে পড়া সমস্ত তারা, আকাশ বেঁধেছে আমার অন্ধকারে।


ঔষধি গাছে ওষুধ ফলেছে, দেহে ফলেছে রোগ।


স্পিড ব্রেকারের ঢেউ— রাস্তাকে দিয়েছে নদীর মর্যাদা।


চারপাশের যে দেয়ালগুলো দেখা যায় না, তারাই দেখেছি কারাগারের নিয়ম মানায় কঠোর!


কদমফুলের চামড়া দিয়ে পাপোশ বানিয়েছিলাম, মুছতে গেলে দেখি পা ভিজে যায় বর্ষার জলে!


যে আমার গলা টিপে ধরেছে আমিও তার গলা টিপে ধরেছি, কেউ কাউকে বলতে পারছি না ক্ষমা করে দাও।


শৈশবে হারানো লাটিম ফিরে এসেছে— আমাকে খুঁজে পাচ্ছে না।


উর্বর হৃদয় পেলে মন রোপণ করে দেখতাম কেমন করে গজিয়ে উঠি।


যার আঙুল নেই, তার ইশারা ফিরিয়ে দিও না।


যে জুতায় ফিতা থাকে, পায়ের প্রতি তার বিশ্বাস নেই।


নিজেকে ভাঙতে ভাঙতে শেষে বুঝেছি— কত শক্ত হাতুড়ি হয়ে গেছি!


ভিটামিন ডি'র মতো ঢুকে পড়েছো— হাড়ে-হাড়ে টের পাচ্ছি তোমাকে।


হৃদয় ঢেকুর দিলে এখনো তোমার ঘ্রাণ আসে।


❑ 

বুকের তৃষ্ণা এতোটাই যে, পকেটে ফুল রাখতেই শুকিয়ে যায়।


পাখিদের আমি কিছুই বুঝতে পারি না— তারা আমার মাথার উপর দিয়ে যায়।


তোমার ঠোঁটের কোণে তিল, আমি কালোজিরা ভেবে সুস্বাস্থ্য রক্ষা করে যাচ্ছি। 


বুকের চর্চায় আমার হৃদয় বড় হয়, তোমার হয় স্তন!


ঘর বেচে বাহির কিনিলাম— ঘরের দ্বিগুণ দামে। 


নীল শার্টের উজ্জ্বল সব বোতাম— একটি কালো টাই ঢেকে দিয়েছে।


বরফের দেশে অযথা বৃষ্টি আমি, তুমি মরুর রোদ।


নিজেকে নক করে দেখেছি, ভেতরে কেউ নেই।


ভেসে থাকা নৌকার রশিটা ধরলেই কেমন করে যেন ঘুড়ির সুতা হয়ে যায়।


তোমাকে রাখবো বলে, বুকে সাহস রাখি না।


.


(#ক্ষুধার্ত_মাছের_স্বাদ বইটা সংগ্রহ করতে চাইলে চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন কে নক করতে পারেন।)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন