'ক্ষুধার্ত মাছের স্বাদ' বই থেকে কয়েকটি প্রতি কবিতা।
❑
বৃষ্টির একটি ফোঁটা কাঁটাতারে কেটে দ্বি-খণ্ডিত হয়ে জল ও পানি হয়ে যায়।
❑
সেদিন ওজন মেপে দেখলাম— ভেতরে তুমি এখনো রয়ে গেছো।
❑
ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি আছে বলেই চুড়ির শব্দে এত প্রণয়!
❑
ওড়ানোর কোনো ঘুড়ি নেই বলে চিলের নিচে নাটাই নিয়ে ঘুরি।
❑
ছায়া ক্রমশ লম্বা হয় বলে— বেঁটে লোকটা রোদে দাঁড়িয়ে থাকে।
❑
দরোজা খুলে কেউ কেউ বলে বাড়িতে কেউ নেই!
❑
স্কুলের মতো জীবনেও ভাঙা জানালা আছে, কেউ কেউ তো পালিয়ে যাচ্ছে টিফিনে!
❑
ধান সোনালি হলো, কৃষক স্বর্ণকার হলো না।
❑
জলপট্টিতে জ্বর সারলো, কপাল সারলো না!
❑
যারা আত্মহত্যা করে, তারা বিস্ময়সূচক চিহ্নকে দাঁড়ি মনে করে।
❑
সমুদ্রের প্রতিটি ঢেউ— চার রানের বাউন্ডারি হয় তীরে।
❑
টিনের চালের একমাত্র ফুটা নিয়ে, বৃষ্টির কয়েকটি ফোঁটা ঝগড়া লেগে গেছে।
❑
জোরে কাশি দিই না, যদি ভেতর থেকে বের হয়ে যাও!
❑
চিরুনির দাঁত ভেঙে গেলে, উঁকুনেরা উল্লাস করে।
❑
প্রেমিকাকে দোলনায় দোল দিয়েছিলাম, দোলনা ফিরে এসেছিল—প্রেমিকা আসেনি।
❑
দুধ অল্পতেই বিদ্রোহী হয়ে ওঠে— আগুন নেভাতে পাতিল টপকে আসে।
❑
আঁচলের গিঁট থেকে টাকা বের করতে গিয়ে মা দেখেন সেখানে আমি লুকিয়ে আছি।
❑
চিরুনি অভিযানে দুই-চারটা চুল বা উঁকুন আসে, মাথা আসে না কখনো।
❑
গভীর জলের মাছেরা বৃষ্টির খবর রাখে না।
❑
মাছ, তোমার দেহে এতো কাঁটা, বিঁধে না?
❑
ব্রিজটি ভেঙে গেছে, একটি পথ আবার দুটি হয়ে গেছে।
❑
ধাক্কা দিয়ে লাভ নেই, পিঠ ঠেকে আছে দেয়ালে।
❑
যে কচুপাতাটি এক ফোঁটা বৃষ্টিও নিতে চাইতো না, তাকেই দেখলাম নদীতে ভাসছে।
❑
নদীর পাশেই একটি পুকুর— অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে।
❑
ঘরে আমাদের জায়গা সংকট বলে, মা বেলুন দিয়ে রুটির মতো মানচিত্রটা ডলেন।
❑
পৃথিবীতে এক শ্রেণির মানুষ আছে, যারা পৃথিবীতে নেই!
❑
জীবন পানসে লাগছিল বলে লবণ ছিটিয়েছিলাম, ক্ষত যে ছিল ভুলে গিয়েছিলাম।
❑
পিঠের যেখানে মায়ের ঝাড়ুর দাগ, সেখানে কখনো ময়লা জমেনি!
❑
ডিমে নক করেছিলাম, কুসুম এসে দরোজা খুলে দিলো।
❑
জেলখানার ভেতরেও গাছ হয়, জন্মানোর অপরাধে।
❑
নৌকা কখনো স্পিড ব্রেকার মাড়িয়ে যায়নি— স্পিড ব্রেকার মাড়িয়ে গেছে নৌকাকে।
❑
কতবার চেয়েছি— তার বুকের পাথরে ভেঙে যাক তারই হাতের চুড়ি।
❑
বরফের শরীরভর্তি শীতল চোখ, হাল্কা তাপেই কান্না করে দলবেঁধে।
❑
তোমার কাছে নত হইনি, মাথা নামিয়ে হৃদয়ের কথা শুনেছি।
❑
প্রেমিকার ঠোঁটে দারুণ ঘাম, চুমুতে আমার লবণ বেশি হয়ে যায়।
❑
মেয়েটার শরীরভর্তি তিল, লোকজন তাকে কালো বলে।
❑
হাজিরা খাতায় দু'বার নাম চলে এসেছে, কোথায় উপস্থিত আছি জানি না!
❑
খসে পড়া সমস্ত তারা, আকাশ বেঁধেছে আমার অন্ধকারে।
❑
ঔষধি গাছে ওষুধ ফলেছে, দেহে ফলেছে রোগ।
❑
স্পিড ব্রেকারের ঢেউ— রাস্তাকে দিয়েছে নদীর মর্যাদা।
❑
চারপাশের যে দেয়ালগুলো দেখা যায় না, তারাই দেখেছি কারাগারের নিয়ম মানায় কঠোর!
❑
কদমফুলের চামড়া দিয়ে পাপোশ বানিয়েছিলাম, মুছতে গেলে দেখি পা ভিজে যায় বর্ষার জলে!
❑
যে আমার গলা টিপে ধরেছে আমিও তার গলা টিপে ধরেছি, কেউ কাউকে বলতে পারছি না ক্ষমা করে দাও।
❑
শৈশবে হারানো লাটিম ফিরে এসেছে— আমাকে খুঁজে পাচ্ছে না।
❑
উর্বর হৃদয় পেলে মন রোপণ করে দেখতাম কেমন করে গজিয়ে উঠি।
❑
যার আঙুল নেই, তার ইশারা ফিরিয়ে দিও না।
❑
যে জুতায় ফিতা থাকে, পায়ের প্রতি তার বিশ্বাস নেই।
❑
নিজেকে ভাঙতে ভাঙতে শেষে বুঝেছি— কত শক্ত হাতুড়ি হয়ে গেছি!
❑
ভিটামিন ডি'র মতো ঢুকে পড়েছো— হাড়ে-হাড়ে টের পাচ্ছি তোমাকে।
❑
হৃদয় ঢেকুর দিলে এখনো তোমার ঘ্রাণ আসে।
❑
বুকের তৃষ্ণা এতোটাই যে, পকেটে ফুল রাখতেই শুকিয়ে যায়।
❑
পাখিদের আমি কিছুই বুঝতে পারি না— তারা আমার মাথার উপর দিয়ে যায়।
❑
তোমার ঠোঁটের কোণে তিল, আমি কালোজিরা ভেবে সুস্বাস্থ্য রক্ষা করে যাচ্ছি।
❑
বুকের চর্চায় আমার হৃদয় বড় হয়, তোমার হয় স্তন!
❑
ঘর বেচে বাহির কিনিলাম— ঘরের দ্বিগুণ দামে।
❑
নীল শার্টের উজ্জ্বল সব বোতাম— একটি কালো টাই ঢেকে দিয়েছে।
❑
বরফের দেশে অযথা বৃষ্টি আমি, তুমি মরুর রোদ।
❑
নিজেকে নক করে দেখেছি, ভেতরে কেউ নেই।
❑
ভেসে থাকা নৌকার রশিটা ধরলেই কেমন করে যেন ঘুড়ির সুতা হয়ে যায়।
❑
তোমাকে রাখবো বলে, বুকে সাহস রাখি না।
.
(#ক্ষুধার্ত_মাছের_স্বাদ বইটা সংগ্রহ করতে চাইলে চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন কে নক করতে পারেন।)