ঝড়
দেখ্ রে চেয়ে নামল বুঝি ঝড়,
ঘাটের পথে বাঁশের শাখা ঐ করে ধড়্ফড়্।
আকাশতলে বজ্রপাণির ডঙ্কা উঠল বাজি,
শীঘ্র তরী বেয়ে চল্ রে মাঝি।
ঢেউয়ের গায়ে ঢেউগুলো সব গড়ায় ফুলে ফুলে,
পুবের চরে কাশের মাথা উঠছে দুলে দুলে।
ঈশান কোণে উড়তি বালি আকাশখানা ছেয়ে
হু হু করে আসছে ছুটে ধেয়ে।
কাকগুলাে তার আগে আগে উড়ছে প্রাণের ডরে,
হার মেনে শেষ আছাড় খেয়ে পড়ে মাটির ’পরে।
হাওয়ার বিষম ধাক্কা তাদের লাগছে ক্ষণে ক্ষণে―
উঠছে পড়ছে, পাখার ঝাপট দিতেছে প্রাণপণে।
বিজুলি ধায় দাঁত মেলে তার ডাকিনীটার মতাে,
দিক্দিগন্ত চমকে ওঠে হঠাৎ মর্মাহত।
ঐ রে, মাঝি, ক্ষেপল গাঙের জল,
লগি দিয়ে ঠেকা নৌকো, চরের কোলে চল্।
সেই যেখানে জলের শাখা, চখাচখীর বাস,
হেথা-হােথায় পলিমাটি দিয়েছে আশ্বাস
কাঁচা সবুজ নতুন ঘাসে ঘেরা―
তলের চরে বালুতে রােদ পােহায় কচ্ছপেরা।
হােথায় জেলে বাঁশ টাঙিয়ে শুকোতে দেয় জাল,
ডিঙির ছাতে বসে বসে শেলাই করে পাল।
রাত কাটাব ঐখানেতেই করব রাঁধাবাড়া,
এখনি আজ নেই তাে যাবার তাড়া।
ভাের থাকতে কাক ডাকতেই নৌকো দেব ছাড়ি,
ইঁটেখােলার মেলায় দেব সকাল-সকাল পাড়ি।
১২।৬।৩৭
আলমােড়া